করোনা পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়া পুলিশের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ
অস্ট্রেলিয়া বহু সংস্কৃতি ও বহু ভাষাভাষীর দেশ। এই প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ে প্রায় ৭২টি দেশের মানুষ বাস করছেন। বহুজাতিক এই দেশে প্রতিটি জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে গভীর সম্পর্ক ও সমন্বয় বজায় রাখতে সরকার ও প্রশাসন বরাবরই সচেতন ও যত্নবান ছিল। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আইন প্রয়োগে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠছে এখন।
অস্ট্রেলিয়ার জাতিবিদ্বেষ বিষয়ক গবেষক টমার হপকিন্স স্থানীয় এসবিএস নিউজকে বলেছেন, কোভিড-১৯ ছড়ানোর জন্য যারা দায়ী তারা পুলিশের জরিমানার বাইরে আছেন। নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করে এমন ধনীদের মাধ্যমেই অস্ট্রেলিয়ায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে। অথচ পুলিশের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছেন এদেশের বিপদগ্রস্ত লোকজন।’
কোভিড-১৯ ঠেকাতে একটি ‘জরুরি আইন’ করেছে অস্ট্রেলিয়ার আইনসভা। এই আইনের বিস্তৃতিও ব্যাপক। পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গির উপরই মূলত নির্ভরশীল এই আইনের প্রয়োগ। তাই শুরু থেকেই মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই আইন প্রয়োগ করছে তার জবাবদিহিতা থাকা উচিত। প্রত্যেকটি রাজ্য ও অঞ্চলে আইন লঙ্ঘনের জন্য কিভাবে জরিমানা করা হচ্ছে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা এবং এবং তথ্য প্রকাশ করতে পুলিশকে অনুরোধ করেছেন তারা।
অনেকেই দাবি করছেন, লকডাউন সঠিক পালন হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পুলিশের কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি সংস্থা থাকা জরুরি। আর তাহলেই সবাই বুঝতে পারবে, পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে কিনা। নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রেডফার্ন আইনি কেন্দ্রের পুলিশি জবাবদিহিতা বিষয়ক আইনজীবী সামান্থা লি বলেছেন, দেখা গেছে, পুলিশ আদিবাসী এবং মুসলিম ও আফ্রিকানদের মতো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীগুলোকে টার্গেট করে জরিমানা করেছে এবং অন্যদের সতর্ক করেই কাজ সারছে। এমন একটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে সংখ্যালঘু লোকদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।’
পুলিশকে নিয়ে যখন অস্ট্রেলিয়াতে এমন বিতর্ক শুরু হয়েছে তখন পুলিশের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুলিশ আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যে জরিমানা করেছে তা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে যে কেউ আদালতে গিয়ে আপিল করতে পারেন।’
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments