গ্রামের সুরক্ষায় বনে হোম কোয়ারেন্টিন ঘর
করোনাভাইরাস থেকে গ্রাম সুরক্ষিত রাখতে রাঙামাটির অনেক স্থানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ফেরত গার্মেন্টস কর্মী, চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীদের জন্য বনের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জেলার বাঘাইছড়ির সদর ইউনিয়ন, সাজেক ইউনিয়ন ও বাঘাইহাট ইউনিয়ন এবং নানিয়ারচরের কিছু পাহাড়ি গ্রামের বনের মধ্যে এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে হোম কোয়ারেন্টিন সেন্টার।
স্থানীয়রা জানান, অস্থায়ীভাবে নির্মিত এসব ঘরে ৪ জন করে থাকতে পারবেন। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের নানা স্থান থেকে আসা শিক্ষার্থী ও গার্মেন্টস কর্মীরা এখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে পারবেন। ইতোমধ্যে গ্রামে গ্রামে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কমিটি করা হয়েছে। কমিটির কাজ হচ্ছে গ্রামে যারা ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে আসছে তারা কোয়ারেন্টিন ঠিক মতো মানছে কি না তা দেখা।
বাঘাইহাট ও সাজেক ইউনিয়নে প্রায় ৩০ টি জয়াগায় এসব অস্থায়ী হোম কোয়ারেন্টিন ঘর বানানো হয়েছে। এরমধ্যে বাঘাইহাট, ভাইবাছড়া, হাজাছড়া, নাঙ্গলমারা, উলুছড়া, নন্দরাম, ডিপুপাড়া, শুকনোছড়া, করল্ল্যাছড়ি, এগুচ্ছাছড়ি ও ভাইবোনছড়া উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা এলাকাসহ কিছু স্থানে এমন ঘর বানানো হয়েছে।
সাজেকের ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা বলেন, ‘সাজেকের যুব সমাজ নিজ উদ্যোগে এসব ঘর তৈরি করছে জেনে আমি খুব খুশি হয়েছি। তাদের এমন উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। সবাই যদি এভাবে এগিয়ে আসে আমরা গ্রামকে করোনামুক্ত রাখতে পারবো।’
চট্টগ্রাম ফেরত নানিয়ারচর উপজেলার খামারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুপ্রিয় চাকমা শিমুল বলেন, ‘নিজের পরবার এবং গ্রামবাসীদের করোনা থেকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে গ্রামের পাশে একটি বনে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে আছি। আগামী ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর বাড়িতে ঢুকবো।’
বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা গ্রামের সুকিরণ চাকমা বলেন, ‘যারা বাইরে থেকে আসছে তাদেরকে গ্রামের সবাই মিলে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার জন্য অস্থায়ী ঘর তুলে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে তাদের খাওয়াসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করছি। তারা যেন সেই অস্থায়ী ঘরে ১৫-২০ পর্যন্ত নিশ্চিন্তে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি।’
উল্লেখ্য, রাঙামাটি জেলায় এখনো কোনো করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়নি। আজ শনিবার পর্যন্ত ১০৮ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। ৭২ জনের রিপোর্ট আসছে, সবার নেগেটিভ। এছাড়া গত কয়েকদিন আগে করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন জন মারা গেলেও তাদের মধ্যে এক জনের করোনা পাওয়া যায়নি। বাকি দুজনের রিপোর্ট এখনও স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে আসেনি।
Comments