করোনা উপসর্গ নিয়ে নোয়াখালী ও খাগড়াছড়িতে ২ জনের মৃত্যু
করোনা উপসর্গ নিয়ে নোয়াখালীতে এক নারী ও খাগড়াছড়িতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ওই নারী ও আজ সকালে যুবকের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দিনরাত সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই নারীর (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বাড়িতে থেকে স্থানীয় কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তার কাছে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছিছলেন। সবশেষ গতকাল সন্ধ্যায় ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন। পরে রাতে নিজ বাড়িতে মারা যান।
করোনা উপসর্গ থাকায় তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নারীর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। যেখানে ১৮টি পরিবার রয়েছে।
বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শহিদুল আহমদে নয়ন। তিনি বলেন, আজ সকালে মারা যাওয়া নারী, তার ছেলে ও মেয়ের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনাগুলো পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজে (বিআইটিআইডি) পাঠানো হয়েছে। ওই নারী গত ৬-৭ দিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। সর্বমেষ তিনি যে চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন, তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত নারীর সংস্পর্শে যাওয়া সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওই নারীর বাড়ি লকডাউনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিদারুল আলম বলেন, ‘লকডাউন করে ওই বাড়ির সামনে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে।’
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মৃত নারীর বাড়িটি লকডাউন করে প্রশাসনের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যাতে করে ওই বাড়ির কেউ বাইরে ও বাইরের কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।’
‘মৃত নারীর দাফন যথানিয়মে হবে। তাকে যাতে কেউ স্পর্শ না করে, সেই ব্যাপারে বাড়ির লোকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে,’ যোগ করেন ওসি।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে এই প্রথম চাটখিল উপজেলার কারো মৃত্যু হলো। এর আগে উপজেলার নয় জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বিআইটিআইডিতে পাঠানো হয়েছিল। এদের মধ্যে সাত জনের পরীক্ষার ফলাফল গতকাল রাতে পাওয়া গেছে। তাদের সবারই ফল নেগেটিভ এসেছে।’
অন্যদিকে, খাগড়াছড়ির গুগড়াছড়িতে জ্বর, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া নিয়ে এক যুবকের (২১) মৃত্যু হয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পূর্ণ জীবন চাকমা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ওই যুবক গতকাল চট্টগ্রাম থেকে এসে তার গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। আজ সকাল থেকে জ্বর, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া নিয়ে মারা গেছেন। তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া, তার সঙ্গে যারা কোয়ারেন্টিনে ছিলেন, তাদের আলাদা করে রাখা হচ্ছে।
Comments