ধামরাইয়ে ইউএনও-ইউএইচএফপিও, একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ঢাকায় পৃথক দুর্ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীসহ নিহত ২
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

করোনাভাইরাস দুর্যোগে ঢাকার ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সামিউল হকের কাছ থেকে প্রশাসনিক কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. নূর রিফফাত আরা। এ কারণে স্বাস্থ্য সেবাদানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

ডা. নূর রিফফাত আরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটির সভাপতি ইউএনও এবং আমি সদস্য সচিব। করোনা প্রতিরোধে এবং চলমান সংকট নিরসনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে প্রশাসনিকভাবে সহযোগিতা করার কথা উপজেলা প্রশাসন তথা ইউএনও’র। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো ধরনের সহযোগিতাই করছেন না।’

করোনা প্রস্তুতিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি প্রাইভেটকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমাদের তা দেওয়া হয়নি উল্লেখ তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে বলেছি, তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে ব্যবস্থা করতে পারবেন না।’

করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এক রোগীকে দাফনের সময় ইউএনও’র পক্ষ থেকে প্রশাসনিকভাবে কোনো সহযোগিতা করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

ডা. নূর রিফফাত আরা বলেন, ‘কয়েক দিন আগে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক রোগী মারা যান। উপজেলা প্রশাসন থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া রোগীদের দাফনের জন্য যাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, সেসময় তাদেরকে আমরা পাইনি। ইউএনও-কে জানানো হলে তিনি আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি এবং বাসা থেকে বের হননি। পরে পুলিশের সহায়তায় আমরা স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করি।’

‘সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী কর্মী ও বহিরাগত একজনের করোনা সনাক্ত হলে বিষয়টি ইউএনও-কে জানালে তিনি প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেননি। করোনা রোগী শনাক্ত হলে রোগীর বাড়ি ও সংশ্লিষ্ট এলাকা লকডাউন ঘোষণা এবং রোগীর সংস্পর্শে আসা লোকদের সনাক্ত করতে উপজেলা প্রশাসনকে স্বাস্থ্যকর্দের সহযোগিতা করার নির্দেশনা রয়েছ, কিন্তু এ ক্ষেত্রেও তিনি আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি। মেয়র ও থানা পুলিশের সিদ্ধান্তক্রমে সংশ্লিষ্ট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ইউএনও’র সমন্বয়হীনতার কারণে  করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসাদের এখনো শনাক্ত করতে পারিনি’, বলেন তিনি।

ধামরাইয়ের কৃষ্ণনগর এলাকায় ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চার জনকে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছিল। স্থানীয়দের তোপের মুখে তাদের সেখানে রাখা যায়নি। বিষয়টি ইউএনও-কে জানালে তিনি কোনো সাড়া দেননি বলে অভিযোগ করেন ডা. নূর রিফফাত আরা।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। যেটির অবস্থা নড়বড়ে। দুই জন করোনা রোগীর অবস্থা এখনো স্থিতিশীল থাকলেও, অবস্থা খারাপ হলে তাদের দ্রুত অন্য হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে জরুরি অ্যাম্বুলেন্সের দরকার হতে পারে। ইউএনও-কে বিষয়টি জানানো হলে, তিনি বলেছেন হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স দিয়েই কাজ চালাতে হবে।’

ইউএনও’র কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে ডা. নূর রিফফাত আরা আরও বলেন, ‘আমি বিষয়টি ডিসি অফিস ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

করোনাকালে ইউএনও’র এমন ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ধামরাই পৌর মেয়র গোলাম কবির মোল্লা ও থানা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার একটা কাজের পরিধি আছে। উপজেলা প্রশাসনে তো কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই। আমি কীভাবে তাদের অ্যাম্বুলেন্স দেব।’

করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে সহযোগিতা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে বিষয়গুলো একদিন পরে জানানো হয় মেইলের মাধ্যমে। আমি তাহলে কীভাবে ব্যবস্থা নেব। আমার কাছে ডকুমেন্ট রয়েছে, আমি আপনাদের দেখাতে পারব।’

স্থানীয়দের তোপের মুখে চার জনকে কৃষ্ণনগর ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা সম্ভব না হওয়ার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘আমাকে জানিয়ে সেখানে রোগী নেওয়া হয়নি। ওখানে কতজন ডাক্তার, নার্স আছে সে বিষয়টিও আমাকে জানানো হয়নি।’

Comments

The Daily Star  | English

What does Trump 2.0 mean for businesses in Bangladesh?

For local business communities, Donald Trump’s victory in the presidential race has been shorthand for the expectation that Western apparel orders and some foreign investments would shift to Bangladesh, with global fashion powerhouse China possibly facing higher import tariffs from the US.

12h ago