ফ্লিনটফের স্লেজিংয়ে ক্ষিপ্ত হয়েই ছয় ছক্কা, জানালেন যুবরাজ

স্লেজিং করে তাকে তাতিয়ে দিয়েছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। আর তাতে ক্ষিপ্ত হয়েই যুবরাজ খেলেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংস।
yuvraj singh
ছবি: এএফপি

২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে বিরল এক কীর্তি গড়েন যুবরাজ সিং। ভারতীয় সাবেক তারকা অলরাউন্ডার ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের টানা ছয় বলে হাঁকান ছয় ছক্কা। মাঠের একটি ঘটনা অবশ্য তার এই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে প্রভাব রেখেছিল। স্লেজিং করে তাকে তাতিয়ে দিয়েছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। আর তাতে ক্ষিপ্ত হয়েই যুবরাজ খেলেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংস।

এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর যুবরাজ ফাঁস করেছেন পর পর ছয় ছক্কা মারার রহস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে ‘স্পোর্টস টক’ নামের একটি লাইভ অনুষ্ঠানে ভক্তদেরকে সেদিনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের গল্পের পেছনের ঘটনা শুনিয়েছেন তিনি।

‘সত্যি কথা বলতে, আমার মাথায় ছয় মারার তেমন ভাবনা ছিল না। কিন্তু ফ্লিনটফের সঙ্গে তর্কাতর্কি আমাকে রাগিয়ে দিয়েছিল। (ব্রডের) আগের ওভারে ফ্লিনটফকে দুটো ভালো ডেলিভারিতে বাউন্ডারি মেরেছিলাম, যা তার পছন্দ হয়নি। ওভার শেষে যখন অন্য প্রান্তে হেঁটে যাচ্ছি, তখন তিনি কিছু একটা বলেন। ঠিক কী বলেছিলেন তা বলতে পারব না। তবে আমার শটগুলো নিয়ে তিনি খোঁচা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, শটগুলো অদ্ভুত। তখন আমি পাল্টা জবাব দিলাম। বেঁধে গেল তর্কাতর্কি। ফ্লিনটফ বলেছিলেন, “তোমার গলা কেটে নেব আমি।” আমি বলেছিলাম, “হাতের ব্যাট দেখতে পাচ্ছ তো? এই ব্যাট দিয়ে তোমাকে কোথায় মারব বলতে পারো?” আম্পায়াররা এগিয়ে এসে থামান আমাদের। তবে তর্কে জড়িয়ে আমি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম আর ঠিক করেছিলাম, প্রতিটি বলই মাঠের বাইরে পাঠাব। সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো, দিনটা আমারই ছিল।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অভিষেক আসরে কিংসমিডে ব্রডের করা ভারতীয় ইনিংসের ১৯তম ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন যুবরাজ। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মাত্র ১২ বলে পৌঁছান হাফসেঞ্চুরিতে, যা এখনও এই সংস্করণে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত ১৬ বলে ৫৮ রান করে থামেন তিনি। তার টর্নেডো ইনিংসের কল্যাণে ৪ উইকেটে ২১৮ রান তুলে ভারত সেই ম্যাচটা জিতেছিল ১৮ রানে।

বিস্ময়ের শেষ নয় এখানেই। যে ব্যাট দিয়ে ইংল্যান্ডকে সেদিন কচুকাটা করেছিলেন যুবরাজ, সেই ব্যাট নিয়ে উঠেছিল নানা প্রশ্ন। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিল্ক্রিস্টের মনেও ব্যাটের উপাদান নিয়ে সন্দেহ জেগেছিল। তাই ম্যাচ শেষে যুবরাজের ব্যাট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছিলেন সেদিনের ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাদুগালে।

‘(ওই সময়ের) অস্ট্রেলিয়ান কোচ আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, আমার ব্যাটের পিছনে কোনো ফাইবার রয়েছে কি-না এবং এটি ব্যবহার বৈধ কি-না! আর ম্যাচ রেফারি কি তা পরীক্ষা করে দেখেছেন? জবাবে আমি তাকে বলেছিলাম, ব্যাটটা যাচাই করে নিতে। এমনকি গিলক্রিস্টও আমাকে এটা জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, আমাদের ব্যাটগুলো কে তৈরি করত! তাই ম্যাচ রেফারি আমার ব্যাট পরীক্ষা করে দেখেছিলেন। তবে সত্যি বলতে, আমার জন্য ব্যাটটি খুবই স্পেশাল ছিল। আমি এর আগে কখনো এমন ব্যাটে খেলিনি। সেটা এবং ২০১১ সালের বিশ্বকাপের ব্যাটটা, দুটোই বিশেষ ছিল।’

Comments

The Daily Star  | English

3 buses set on fire within 10 minutes

The incidents were reported in the capital's Gabtoli, Agargaon, and Sayedabad

4h ago