বকেয়া বেতনের দাবিতে সাকিবের অ্যাগ্রো ফার্মে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বকেয়া বেতনের দাবীতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনীতে বিক্ষোভ করেছেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের কাঁকড়া হ্যাচারির শ্রমিকরা। গত চার মাস ধরে বেতন না পাওয়ার অভিযোগ এনে আজ সোমবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ-নীলডুমুর সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। তবে আধা ঘণ্টা পর আন্দোলনরত শ্রমিকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয় র্যাব।
প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, সকাল আটটার দিকে বুড়িগোয়ালিনীতে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের সামনে এক-দুই জন করে শতাধিক শ্রমিক জড়ো হয়। পরে বকেয়া বেতনের দাবিতে সকাল নয়টার দিকে মুন্সিগঞ্জ-নীলডুমুর সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা। একপর্যায়ে র্যাব এসে, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে আন্দোলন করায় তাদেরকে সরিয়ে দেয়।
এ প্রসঙ্গে অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের নারী শ্রমিক মনোয়ারা খাতুন জানান, তারা দুই বছর ধরে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডে কাজ করছেন। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন পেয়েছেন। এরপর জানুয়ারি থেকে তিন মাস ১৮দিন দাবত তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া গত দুই বছর তাদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে সঞ্চয় হিসেবে রেখে দেওয়া হয়েছে। এখন বেতন ও সঞ্চয় কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। বর্তমানে কাজ না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। আবার করোনাভাইরাসের কারণে অন্য কোথাও কাজও পাচ্ছেন না। এখন তাদের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
আরেক শ্রমিক শহীদুল ইসলাম জানান, চার মাস মতো বেতন না পেয়ে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। এখন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডে তারা কাজ করতে পারছেন না। করোনার কারণে অন্য কাজও নেই এলাকায়। এমতাবস্থায় তিনি দাবি করেন তাদের বকেয়া বেতন দ্রুত দেওয়ার জন্য।
র্যাব ৬ এর শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের ক্যাম্পের ডিএডি জামিল হোসেন মুঠোফোনে জানান, ১২০-১২৫ জন শ্রমিক সামাজিক দূরত্ব না মেনে বকেয়া বেতনের দাবিতে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের সামনে বিক্ষোভ করছিল। পরে তারা সে স্থানে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সকল শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেন।
সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো: সালাউদ্দিন জানান, গত কয়েক মাস তাদের চালান বন্ধ থাকায় জানুয়ারি মাসে শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জানুয়ারি মাসের বেতন পাবেন। ওই বেতন আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শ্রমিকরা চার মাসের বেতন পাবে না। তারা কয়েকবার এসে বেতন পায়নি। এক মাসের বেতনই তারা তিন মাস ধরে দিতে পারছেন না।
তিনি আরও জানান, 'সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড এর অংশীদার ও তত্ত্বাবধায়ক সগীর হোসেন। তিনিই দেখাশুনা করেন। সাকিব আল হাসানের নামে ফার্মটি মাত্র। তিনি এখানে আসেন না। সব দায় দায়িত্ব সগীর হোসেনের।'
মুঠোফোন সরাসরি ও খুদে বার্তা দিয়ে সগীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি।
Comments