ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশপাশের ৪ জেলা থেকে লোক আসে জানাজায়

জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও এর আশপাশের চার জেলা থেকে খেলাফত মজলিশ নেতা যোবায়ের আহম্মদ আনসারীর জানাজায় লোক এসেছিল বলে জানতে পেরেছে তদন্ত কমিটি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জানাজায় গণজমায়েত। ছবি: স্টার

জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও এর আশপাশের চার জেলা থেকে খেলাফত মজলিশ নেতা যোবায়ের আহম্মদ আনসারীর জানাজায় লোক এসেছিল বলে জানতে পেরেছে তদন্ত কমিটি।

ঘটনাটি চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি তদন্ত করছে। জানাজায় উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। তারাই হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী ও ঢাকা এই চার জেলার কথা জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা রোববার সন্ধ্যায় সরাইলের বেড়তলায় এলাকা পরিদর্শন করেন। জানাজায় কিভাবে লোকসমাগম হলো এবং এক্ষেত্রে সরকারি দায়িত্বশীল কারো দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখছেন তারা।

তদন্ত দলের প্রধান চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন স্থানীয় এক টেলিভিশন সাংবাদিকের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই লোক সমাগম ঘটে যায়। সার্বিক বিষয় তদন্ত করে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও দুএকদিন বিলম্বও হতে পারে।’

জানাজার আগের দিন (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ৪৭ মিনিটে যুবায়ের আহম্মদ আনসারীর ছেলে একটি পোস্ট করে ঘোষণা দেন যে, রোববার সকাল ১০টায় বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তারা বাবার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই পোস্টের বিষয়টিও তদন্ত কমিটিকে জানানো হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইনে জেলার শীর্ষস্থানীয় আলেমদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মাওলানা সাজিদুর রহমান ও মুফতি মোবারক উল্লাহর নেতৃত্বে প্রায় ১৫ জন ওই বৈঠকে যোগ দেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আলেমরা তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, এত মানুষ সেদিন কোথা থেকে এসেছিল সেটি তারা নিজেরাও বুঝতে পারেননি। যোবায়ের আহম্মদ আনসারীর অনেক ভক্ত থাকার কথা জানিয়ে তারা বলেন, লকডাউন না থাকলে কয়েক লাখ লোকের সমাগম ঘটত সেদিন।

এদিকে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর থেকেই সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। সেদিন থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের ফোন ধরছেন না জেলার এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। এমনকি কার্যালয়ে গিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না তাদের। জানাজার পর থেকে তাদের অধীনস্থ অন্য কর্মকর্তারাও সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল, শুক্রবার বিকেল পৌনে ৬টায় যোবায়ের আহমেদ আনসারীর মৃত্যুর পর মাগরিব এবং এশার নামাজের সময় মসজিদের মাইক থেকে জানাজার সময় উল্লেখ করে ঘোষণা দেওয়া হয়। এমনকি শনিবার ফজরের নামাজের পরও একই ঘোষণা দেওয়া হয়। তারপরও এ নিয়ে প্রশাসনের কোন তৎপরতা ছিল না।

জনসমাগম ঠেকাতে তৎপর না হওয়ায় এরই মধ্যে সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Mob beating at DU: Six students confess involvement

Six students of Dhaka University, who were arrested in connection with killing of 35-year-old Tofazzal Hossain inside their hall on Wednesday, confessed to their involvement in the crime before a magistrate

2h ago