ছুটিতে চলছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, রাজস্ব ফাঁকির আশঙ্কা

Chittagong Port.jpg
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: স্টার

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চলমান সাধারণ ছুটির মধ্যেই দেশের সকল কাস্টমস হাউজ ও স্টেশনগুলোকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পুরোদমে চালু করার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সীমিত জনবল দিয়ে সব ধরণের পণ্য খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে গেলে মিথ্যা ঘোষণায় রাজস্ব ফাঁকির প্রবণতা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন শুল্ক কর্মকর্তারা।

গত ২৭ দিন জরুরি ওষুধ, খাদ্য পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল খালাসের সুযোগ থাকলেও বাণিজ্যিক পণ্য খালাসে নিষেধাজ্ঞা ছিল। পরিবহন সংকট, কারখানা বন্ধ থাকাসহ বিভিন্ন কারণে বন্দরে আমদানি পণ্যের স্তূপ বাড়তে থাকায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।

আজ বুধবার এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মেহরাজ-উল-আলম সম্রাট স্বাক্ষরিত এক আদেশে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে সব কাস্টমস হাউস ও কাস্টমস স্টেশনগুলোর স্বাভাবিক দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুরোধ করা হয়।

আদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসরণ করার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের তথ্য মতে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভিড় এড়ানোর জন্য কাস্টমস হাউজে জনবল কমিয়ে আনা হয়েছে। আগে প্রায় সাড়ে পাঁচশ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজ করলেও, বর্তমানে তা কমিয়ে ১৩৫-১৫০ জনে আনা হয়েছে। এতো কম জনবল দিয়ে কাস্টমসের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা বলছেন, পুরোদমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে পূর্ণ জনবল দিয়েই কাজ শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে না।

নাম প্রকাশ না করে কাস্টমসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে চার হাজার চালান খালাসের অনুমতি দেয় কাস্টমস হাউজ। প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় অর্ধেক জনবল দিয়েই কাস্টমস হাউজ চলছে। তার ওপর বর্তমান পরিস্থিতিতে জনবল আরও কমিয়ে আনা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অসাধু আমদানিকারকরা মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য খালাসের সুযোগ নিতে পারে।’

রাজস্ব ফাঁকির ঝুঁকি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার ফকরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ সুযোগে বেশ কিছু অসাধু আমদানিকারক ও খালাসে নিয়জিত সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মীরা মিথ্যা ঘোষণার পণ্য ছাড় করতে পারে এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সে অনুযায়ী কাস্টমসের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকির আশঙ্কা থাকায় বেশকিছু পণ্য, আমদানিকারক এবং সিএন্ডএফ এজেন্টদের তালিকা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বা পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

ইতোমধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম শনাক্ত করা হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে আগের তুলনায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অনেক কমে এসেছে। তারপর পরিবহন সংকট, শ্রমিক সংকটসহ বেশিরভাগ শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকায় পণ্য খালাসও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম হচ্ছে। তারপরও যদি প্রয়োজন হয় আমরা জনবল বাড়াতে পারবো।’

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ছুটি হওয়ার পর গত ২৬ মার্চ থেকে বাণিজ্যিক পণ্য শুল্কায়ন ও খালাস বন্ধ রাখায় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া কনটেইনার পণ্যের জটে প্রায় অচল হয়ে পড়ে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ও আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে বাণিজ্যিক পণ্য শুল্কায়নে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতেই সব ধরণের পণ্য খালাসের অনুমতি দেয় এনবিআর।

Comments

The Daily Star  | English

Beyond development paradox & unnayan without democracy

As Bangladesh seeks to recalibrate its path in the aftermath of recent upheavals, the time is ripe to revisit an oft-invoked but under-examined agenda: institutional reform. Institutions are crucial to understand, as they are foundational for governance, transformation, and economic development.

16h ago