‘অধিনায়ক তামিমের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছি’
করোনাভাইরাসের মহামারি না থাকলে রাসেল ডমিঙ্গো হয়ত এখন আয়ারল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে খেলে ফিরেই শুরু হতে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের তোড়জোড়। কিন্তু মহামারি ভাইরাসের কারণে সব আয়োজনই গেছে ভেস্তে। কর্মস্থল বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় ছুটি কাটাচ্ছেন ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ। সেখান থেকেই অনলাইনে দ্য ডেইলি স্টারকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন তিনি। কথা বলেছেন স্থবির সময় শেষে ফেরার প্রস্তুতি, তামিম ইকবালের অধিনায়কত্ব ও সাকিব আল হাসানের ফেরা নিয়ে।
এই বছরে অনেক খেলা ছিল, অস্ট্রেলিয়া আসার কথা ছিল। আপনার নিশ্চয়ই অনেক পরিকল্পনা ছিল?
রাসেল ডমিঙ্গো: অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ না হওয়া খুবই হতাশার। যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে ট্যুর না হওয়াও তেমনি। এই দুই সিরিজ মিস করা অনেক ক্ষতি আমাদের। যত বেশি টেস্ট খেলব, তত ভালো আমাদের। অবশ্যই আমি হতাশ, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য।
কবে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু হবে তা অনিশ্চিত। সব কিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর আপনার পরিকল্পনা কি?
ডমিঙ্গো: অবশ্যই নিশ্চিত না কবে খেলা শুরু হবে। কিন্তু শুরু হওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শারীরিক ও মানসিকভাবে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।
ক্রিকেট ফেরার পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি হতে পারে?
ডমিঙ্গো: সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে শারীরিকভাবে ফিট থেকে আবার শুরু করা। খেলোয়াড়দের প্রত্যেককে আলাদা কাজের সূচি দেওয়া হয়েছে। যাতে লকডাউনের পর সম্পূর্ণ ফিট থেকে আমরা খেলাটা শুরু করতে পারি।
স্বাভাবিক হওয়ার পর প্রথমে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশি প্রাধান্য দিতে চাইবেন কি?
ডমিঙ্গো: ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যাপারে বলব, আমি নিশ্চিত না কোন জায়গা থেকে শুরু করব। অবশ্যই ঘরোয়াতে কে কেমন করে সেদিকে আমার চোখ থাকবে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ হচ্ছে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিপিএল) ও প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কাছ থেকে তা নজর রাখতে চাইব।
চলমান পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে সব স্বাভাবিক হতে হতে সাকিব আল হাসানকেও পাওয়া যাবে। এই ব্যাপারে কি মত আপনার?
ডমিঙ্গো: মনে হচ্ছে যখন খেলা শুরু হবে, সাকিবকেও পাওয়া যাবে। সে সম্ভবত অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ আছে। বাড়তি সুবিধা হলো, খুব বেশি খেলা সে মিস করছে না। সে দারুণ খেলোয়াড়, বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। তাকে আমাদের দলে ফেরত পাওয়া দুর্দান্ত ব্যাপার। খেলোয়াড়রা তার সঙ্গে খেলতে আবার উৎসাহী হবে। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য তার সঙ্গে খেলা দারুণ কিছু।
তামিম ইকবালের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পাওয়া কীভাবে দেখেন?
ডমিঙ্গো: নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের সঙ্গে কাজ করতে আমি মুখিয়ে আছি। বিরতি শেষে সে খেলায় ফেরার পর তার সঙ্গে আমার সময়টা ভালোই গিয়েছে। আমি সত্যিই আনন্দিত সে অধিনায়ক হয়েছে। অধিনায়কত্বের জন্য আরও এক-দুইটা বিকল্প ছিল। কিন্তু বোর্ড তামিমকে বেছে নিয়েছে, আমার মনে হয় এটা সেরা সিদ্ধান্ত। তার সঙ্গে কাজ করছে অবশ্যই মুখিয়ে আছি। সে যেভাবে কাজ করে আমি উপভোগ করি।
আপনি কি মনে করেন তামিম মাশরাফি বিন মর্তুজার মতো সফল নেতার যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারবেন?
ডমিঙ্গো: মাশরাফিকে নিয়ে বলা কঠিন। আমি তাকে খুব বেশি জানি না। কেবল কিছু ম্যাচে তাকে পেয়েছি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনটা ম্যাচ। আমি জানি না সে কি পদ্ধতিতে কাজ করত। কিন্তু দেখুন, তামিম বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি। সে অবিশ্বাস্যভাবে পারফর্ম করেছে। সব ফরম্যাটে (টেস্টে মুশফিকুর রহিম) সে দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। সে খেলাটা নিয়ে অনেক জ্ঞান রাখে এবং নেতৃত্ব দিতে জানে। আমার মনে হয় না সে অন্য আন্তর্জাতিক অধিনায়কের থেকে বেশি চাপে থাকবে। আমি আশা করব সামনে দারুণ কিছু হবে।
আপনার কি মনে হয় মহামারির পর ক্রিকেট বিশ্বেও বদল আসবে?
ডমিঙ্গো: আমার মনে হয় এই ভাইরাসের পর বিশ্ব একইরকম থাকবে না, যতক্ষণ না ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়। সবাই সামাজিক দূরত্ব নিয়ে খুব সতর্ক থাকবে। অন্যের কাছে যাবে না। জীবনামুক্ত থাকার ব্যাপার বড় হবে। আমার মনে হয় না সব কিছু আগের মতো থাকবে।
Comments