ক্রিকেটকে বিদায় বললেন সানা মীর
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সানা মীর। তর্কসাপেক্ষে দেশটির ইতিহাসের সেরা নারী ক্রিকেটার বিবেচনা করা হয় তাকে।
শনিবার ৩৪ বছর বয়সী তারকা ডানহাতি অলরাউন্ডার জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিয়েছেন। ২০০৫ সালে পাকিস্তানের জার্সিতে অভিষেকের পর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মোট ২২৬ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এর মধ্যে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৩৭টিতে।
তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরের পর পাকিস্তানের হয়ে আর মাঠে নামা হয়নি সানার। লাহোরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে তিনি খেলেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। এরপর তাকে ছাড়াই গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেয় পাকিস্তান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই সিরিজের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্বেচ্ছায় ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন সানা। উদ্দেশ্য ছিল, অবসর সময়টাতে নিজের খেলোয়াড়ি ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা সাজানো। অবশেষে চূড়ান্ত বিদায়ের কথা বলে দিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে সানা জানিয়েছেন, এখনই তার জন্য ব্যাট-বল গুছিয়ে রাখার সঠিক সময়, ‘গত কয়েক মাস আমাকে চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছে। আমার মনে হয়, এখন (খেলোয়াড়ি জীবন পেছনে ফেলে) এগিয়ে যাওয়ার সঠিক সময়। আমি বিশ্বাস করি যে, আমি আমার দেশ এবং খেলাধুলার জন্য আমার সক্ষমতার সর্বোচ্চ অবদান রাখতে পেরেছি।’
পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান সানার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেটের পক্ষ থেকে আমি সানা মীরকে অত্যন্ত সফল একটি ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন জানাই। তিনি বহু বছর ধরে পাকিস্তান নারী ক্রিকেটের প্রতীক এবং নারী ক্রিকেটারদের তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণার আসল উৎস।’
অফ-স্পিনে পারদর্শী সানা ওয়ানডেতে পাকিস্তানের সর্বকালের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। ১২০ ম্যাচ খেলে তিনি সাজঘরে পাঠিয়েছেন ১৫১ ব্যাটারকে। নারী ওয়ানডের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার নজির দেখাতে পেরেছেন মাত্র তিনজন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে এই সংস্করণের আইসিসি বোলারদের র্যঙ্কিংয়ের শীর্ষেও উঠেছিলেন সানা। ১০৬ টি-টোয়েন্টিতে তিনি শিকার করেছেন ৮৯ উইকেট। ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট সংস্করণে পাকিস্তানের জার্সিতে তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে কেবল নিদা দারের (৯৮ উইকেট)।
ওয়ানডেতে পাকিস্তানের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ রানও রয়েছে সানার নামের পাশে। তিন হাফসেঞ্চুরিতে ১৭.৯১ গড়ে করেছেন ১ হাজার ৬৩০ রান। টি-টোয়েন্টিতে ১৪.০৭ গড়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮০২ রান।
ব্যক্তিগত সাফল্যের পাশাপাশি ১৫ বছরের দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে দলীয় সাফল্যও উপভোগ করেছেন সানা। ২০১০ ও ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে পাকিস্তানের হয়ে স্বর্ণ পদক জয়ের স্বাদ নিয়েছেন দেশটির নারী ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন খ্যাত তারকা।
Comments