আমদানির ৩ গুণ দামে আদা বিক্রি

‘আদার বাজারে অস্থিরতায় খাতুনগঞ্জের ৪ ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট’

খাতুনগঞ্জ পাইকারী বাজার। ফাইল ফটো স্টার

আদার বাজারে অস্থিরতা তৈরির পেছনে চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের চার ব্যবসায়ীর একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।

‘আমরা আমদানির তথ্য সংগ্রহ করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাজারে অভিযান পরিচালনা করছি। এতে করে বাড়তি দাম রাখার বা মজুদ রাখার তথ্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই,’ বলেন তিনি।

আজ রোববার খাতুনগঞ্জসহ চট্টগ্রামের একাধিক বাজারে অভিযান চালিয়ে বাড়তি মূল্যে পণ্য বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় তিন ব্যবসায়ীকে ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ও আবদুস সামাদ শিকদার।  

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামে বাজারে অভিযান চালিয়ে আমদানি মূল্যের চেয়ে বিক্রি মূল্য প্রায় তিন গুণ পর্যন্ত বেশি পেয়েছি। গত সপ্তাহেও আমদানিকৃত আদার দাম ৯০ টাকা কেজি দরে হলেও তা পাইকারী বাজারে ১৫০-১৮০ টাকা এবং খুচরা বাজারে তা ২৫০ টাকার বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেয়েছি।’

জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল চীন থেকে ২৭ টনের একটি আদার চালান আমদানি করেন চট্টগ্রামের আমদানিকারক মেসার্স কে এন ইন্টারন্যাশনাল। আমদানি ব্যয় প্রতি কেজি ৯৮ দশমিক ৯১ টাকা হলেও চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে তা বিক্রি করা হয় ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে। যা খুচরা পর্যায়ে এসে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গত চার মাসে ৩৫টি চালানে চট্টগ্রামে ৩২ জন আমদানিকারক প্রায় ৩১৪৪ টন আদা আমদানি করেন। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতি কেজি আদার দাম ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা পড়েছে। এপ্রিলে এসে আদা আমদানি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে। এসব আদা আমদানি হয়েছে ভারত, চীন, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভুটান থেকে।

খাতুনগঞ্জের আদার আমদানিকারক ও ব্রোকার জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমদানি মূল্য ৮০-৯০ টাকা হলেও বন্দর থেকে বাজার পর্যন্ত পৌঁছতে বাড়তি খরচ রয়েছে। তাছাড়া আদা পচনশীল পণ্য হওয়ায় প্রায় ১০-১৫ শতাংশ আদা পচে যায়। ফলে সবমিলিয়ে প্রতি কেজি আদার দাম পড়ে প্রায় ১১৫-১২০ টাকা।  

তিনি দাবি করেন, ‘চাহিদার তুলনায় বাজারে আদার সংকট থাকায় মূলত দাম একটু বেশি পড়ছে। বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি না করলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।’

চাহিদার অজুহাতে অযৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি করা উচিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাজারে আদার সংকট থাকায় যে যার ইচ্ছে মতো দাম চাচ্ছে এবং সেই দামে বিক্রি করতে পারছে। আদার অনেক চালান বন্দরে আটকে আছে। এসব চালান বাজারে এলে এমনিতেই দাম কমে যাবে।’

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে অভিযান পরিচালনার সময় অধিকাংশ দোকানদারই পালিয়ে যায়। আমদানিকারকদেও ঠিকানায় গিয়ে পাওয়া যায় না। ইতোমধ্যে আমদানিকারক, ব্রোকার ও পাইকারী ব্যবসায়ীর ঠিকানায় চিঠি দিয়ে বিস্তারিত ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে তাদের আমদানি-রপ্তানির লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

10h ago