জট কমাতে আবারও কন্টেইনার ভাড়া মওকুফের ঘোষণা চট্টগ্রাম বন্দরের
তীব্র কন্টেইনার জট কমাতে এবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) শুধুমাত্র তৈরি পোশাক কারখানার আমদানি করা কন্টেইনার রাখার ভাড়া আগামী ৪ মে পর্যন্ত শতভাগ মওকুফের ঘোষণা দিল।
বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিবহন বিভাগ থেকে গতকাল সোমবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সদস্যদের আমদানি করা কন্টেইনার কেবলমাত্র ৪ মের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডেলিভারি গ্রহণ করা হলে সেগুলোর বিপরীতে আদায়যোগ্য স্টোর ভাড়া শতভাগ মওকুফ করা হবে।
বন্দর কর্মকর্তাদের মতে, বন্দরে পড়ে থাকা কন্টেইনারের অন্তত ৪০ ভাগ তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর আমদানি করা। যাতে রয়েছে পোশাক কারখানার কাঁচামাল ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম।
গতকাল পর্যন্ত বন্দর চত্বরে জমে থাকা আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনারের সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৭৩৪ একক (টিইইউস), যা মোট ধারণক্ষমতার চাইতে ছয় হাজার এককেরও বেশি।
এ নিয়ে চলতি মাসে দ্বিতীয়বার কন্টেইনার রাখার ভাড়া মওকুফ করল বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৫ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, সাধারণ ছুটিকালে আমদানি করা কন্টেইনার ছুটির মধ্যেই খালাস করে নিলে স্টোর ভাড়া শতভাগ মওকুফ করা হবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় ছুটির কারণে দেশব্যাপী পরিবহন সংকট, পণ্য ছাড়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সীমিত কার্যক্রমের ফলে পণ্য ডেলিভারি নিতে নানা সমস্যার কথা বিবেচনায় নিয়ে আমদানিকারকদের এ ছাড় দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু, এ সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হয়। মাশুল ছাড়ের সুযোগ নিয়ে আমদানি পণ্য বন্দর চত্বরে লম্বা সময় ফেলে রাখার প্রবণতা দেখা যায়। ফলে, চবক গত ২০ এপ্রিল ঐ সুবিধা বাতিল করে।
এ প্রসঙ্গে চবক বোর্ড সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম বলেন, ‘বন্দর কোনো গুদামঘর নয়। বন্দরকে বিপদে ফেলে দীর্ঘ সময় আমদানি পণ্য ফেলে রাখা উচিত নয়।’
এবার স্বল্প সময়ের জন্য এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি, পোশাক শিল্পের আমদানিকারকরা দ্রুত তাদের পণ্য খালাস করে বাকি আমদানিকারকদের পণ্য যেগুলো দীর্ঘ সময় ধরে জাহাজে রয়েছে তা চত্বরে নামানোর সুযোগ দেবেন।’
চবক ঘোষিত এবারের সুবিধা প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আগের বার যখন সুবিধা দেওয়া হয়, তখন কারখানাগুলো বন্ধ ছিল। এছাড়াও, পণ্য খালাসের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোর কার্যক্রমও সীমিত থাকার কারণে পণ্য খালাস পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন কাস্টমস, ব্যাংক, শিপিং এজেন্টসহ সবগুলো সংস্থার কার্যক্রম বেড়েছে। এছাড়াও, বেশ কয়েকটি কারখানাও খোলা হয়েছে।’ এবার পণ্য খালাসের হার বাড়বে বলে তিনি আশা করেন।
Comments