দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে

আজ রাত থেকেই ইলিশ ধরা শুরু

ইলিশ ধরতে জাল ও নৌকা নিয়ে প্রস্তুত চাঁদপুরের জেলেরা। ছবি: আলম পলাশ

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে আজ। রাত ১২ টার পর আবারও মাছ ধরতে নদীতে নামবেন জেলেরা। মাছ ধরতে প্রস্তুত আছেন এই অঞ্চলের প্রায় ৫২ হাজার জেলে।

গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এই সময়ে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল।

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এক শ্রেণির জেলে চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনায় জাটকাসহ মাছ শিকারে নামেন। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির কারণে জাটকা রক্ষায় তেমন একটা নজর দিতে পারেননি বলে জানায় প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জাটকা রক্ষায়  ব্যাপক অভিযান চালিয়েছি। বিপুল পরিমাণ জাটকাও উদ্ধার করেছি। এখন করোনার কারণে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। কারণ মানুষ বাঁচলে ইলিশও বাঁচবে।’

পুরানবাজার হরিসভা এলাকার জেলে দীন ইসলাম বলেন, ‘সরকার আমাদের চাল দিয়েছেন। তাই আমরা দুমাস নদীতে নামিনি। এখন জাল নৌকা নিয়ে বসে আছি কখন নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে।’

মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের দাবি, জাটকা রক্ষায় এই দুইমাস নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সহযোগিতায় ৪৮৮ টি অভিযান চালানো হয়। এ সময় জব্দ করা হয় প্রায় ১৭ মেট্রিক টন জাটকাসহ ২৯৪ লাখ মিটার জাল। ৭৫ জন জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ২ লাখ ১৬ হাজার জরিমানা করা হয়। মামলা দেওয়া হয় ৬২ টি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, ‘এবার আমরা করোনার কারণে নদীতে আগের মতো অভিযান চালাতে পারিনি। এজন্য জাটকা রক্ষা কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু, জেলেরা যাতে নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে না নামেন সেজন্য জেলার ৩৮ হাজার ৫ জন জেলেকে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চার মাস চাল দেওয়া হয়।’

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড.আনিসুর রহমান বলেন, ‘গত অক্টোবরে ইলিশের ডিম ছাড়ার হার ছিল প্রায় ৪৯ ভাগ। যা অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু এই ডিম যে পরিমাণ প্রটেকশন হওয়া দরকার ছিল সেটা করোনার কারণে হয়নি। আর করোনার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু জেলে ব্যাপক আকারে জাটকা নিধন করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এরপরও যে পরিমাণ জাটকা রয়ে গেছে তা রক্ষা করা গেলে ইলিশের উপর তেমন প্রভাব পড়বে না। তবে, করোনা দীর্ঘায়িত হলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ রক্ষায় শঙ্কা থেকে যাবে।’ 

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque must be sworn in or larger movement may erupt: Salahuddin

"We have always cooperated with this government. But that doesn't mean we've handed you a blank cheque"

16m ago