যশোরে ব্রি হাইব্রিড-৫ ধান চাষে কৃষকের সাফল্য
যশোরের কেশবপুর উপজেলায় উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড-৫ ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মঙ্গলকোটের কৃষক আহম্মেদ আলী। উপজেলা কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে ওই কৃষক তার ৩২ শতক জমিতে বি হাইব্রিড-৫ চাষ করে ৩৬ মন ধান পেয়েছেন। যা অন্যান্য জাতের তুলনায় অনেক বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কেশবপুর উপজেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ উপজেলায় এবার ১৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে।
ইতোমধ্যে ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও শ্রমিক সংকট না থাকায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান কাটা সম্পন্ন হবে। গত বছরের তুলনায় এবছর বেশি ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
কৃষি অফিস জানিয়েছে, কেশবপুর উপজেলায় ৩০ হাজার কৃষক রয়েছেন। এর মধ্যে লটারির মাধ্যমে ১ হাজার ৯১৫ জন কৃষকের কাছ থেকে সরকারিভাবে ১ হাজার ৯১৫ টন ধান কেনা হবে। উপজেলায় এবছর ব্রি উদ্ভাবিত ব্রি ধান-২৮, ৫০, ৬৩, ৬৭, ৮০, ৮৪, ৮৬ ও ৮৮ জাতের চাষ হয়েছে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন ধরনের হাইব্রিড ধানের চাষও হয়েছে। তবে নতুনভাবে চাষ হয়েছে ব্রি উদ্ভাবিত হাইব্রিড-৫ ধানও। কৃষি অফিসের মাধ্যমে ২ কেজি ব্রি ধান বীজ গাজীপুর থেকে সরবরাহ করা হয়েছিল।
মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বসুন্তিয়া গ্রামের কৃষক আহম্মেদ আলী এ ধান চাষ করে অন্য ধানের থেকে বেশি ফলন পেয়েছেন। তিনি ৩২ শতক জমিতে ব্রি হাইব্রিড-৫ জাতের ধান চাষ করে ৩৬ মন ধান পেয়েছেন। যা প্রতি হেক্টরে টন পরিমাণ উৎপন্ন হবে। ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক আহম্মদ আলী ব্যাপক খুশি। ওই কৃষকের ধান কাটা শেষ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা, কেশবপুরের আশরাফ উজ জামান খান জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইমরান বিন ইসলাম, উপসহকারী কৃষি অফিসার দীপ জয় বিশ্বাস ও মিলন দাসসহ এলাকার কৃষকরা।
কৃষক আহম্মদ আলী জানান, তিনি ব্রি ধান-৮৪, ব্রি ধান-৫০ ও বি হাইব্রিড ধান-৫ চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ব্রি হাইব্রিড-৫ ধান চাষ করে ৩২ শতক জমিতে ৩৬ মন ধান পেয়েছেন। ওই ধানের বাম্পার ফলন দেখে এলাকার কৃষকরা তার কাছ থেকে এই ধান নিয়ে চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা জানান, এবার কেশবপুরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটা শুরু হয়েছে। শ্রমিক সংকট না থাকায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সকল ধান কাটা হয়ে যাবে।
ব্রি হাইব্রিড-৫ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ ধান চাষে প্রায় ৬ টন বেশি উৎপাদন হবে। যে কারণে ব্রি হাইব্রিড-৫ ধান চাষে বর্তমানে কৃষক ঝুঁকে পড়ছে। ইতোমধ্যে এ ধান চাষের জন্য কৃষি অফিসে যোগাযোগ করছেন অনেক কৃষক।’
এবছর সরকারিভাবে লটারির মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে ১ হাজার ৯১৫ টন ধান ক্রয় করা হবে বলেও জানান তিনি।
Comments