বড় ভাইকে হত্যার অভিযোগে যুবক আটক

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আনিকেলীবড় এলাকায় বাড়ি থেকে নিখোঁজের একদিন পর খাল থেকে মেরাজ মিয়া (৪৭) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল বিকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মেরাজ মিয়াকে হত্যার রহস্য উদঘাটনের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ভাবির সঙ্গে পরকীয়ার কারণে বড় ভাই মেরাজ মিয়াকে পথের কাটা মনে করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন ছোট ভাই বদরুল মিয়া (২৭)। তাকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আনিকেলীবড় গ্রামের মেরাজ মিয়া নিজ ঘরে ইফতার শেষে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। এরপর এলাকাবাসী শুক্রবার বিকাল চারটার দিকে খালের মধ্যে মেরাজের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

এরপর প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিহত মেরাজের ছোট ভাই বদরুল মিয়াকে সন্দেহ করে এবং জানতে পারে তিন দিন আগে নিহতের স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। মেরাজের এক ছেলে (৫) ও এক মেয়ে (৮) রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বদরুল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যান এবং নানা কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। প্রথম দিকে বদরুল মিয়া কিছু স্বীকার না করে এড়িয়ে যেতে চাইলেও, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার রহস্য বেরিয়ে আসে।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের কারণে এক সময় সে ঘটনা স্বীকার করে এবং আমরা জানতে পারি সে হত্যা করেছে। ভাবির সঙ্গে বদরুলের দীর্ঘদিনের পরকীয়া ছিল। তারা নিজেরা নিজেরা বিয়েও করেছে প্রায় দুই বছর আগে। কয়েক দিন আগে পরকীয়ার বিষয়টি বড় ভাই জানতে পারলে স্ত্রীর সঙ্গে প্রচুর ঝগড়া হয়। তিনদিন আগে তার স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এতে বদরুল মনে মনে ক্ষুব্ধ হন এবং বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ইফতারের পর মেরাজ মিয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে ঘুরতে গেলে ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান নেন বদরুল এবং রাত ১০টার দিকে যখন বড় ভাই মেরাজ বাজার থেকে ফিরছিলেন, তখন প্রথমে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে পরে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে আরও আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়িতে চলে যান। যেহেতু সবাই আলাদা এবং ঘরে স্ত্রী নেই, তাই সে রাতে কেউ আর মেরাজের খোঁজ নেয়নি। পরদিন বিকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বদরুল মিয়া ভাবিকে মনে মনে বিয়ে করেছে। বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করার কারণে ভাবি বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ায় পথের কাটা হিসেবে ভাইকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

3h ago