স্কেচ দেখে ধর্ষককে গ্রেপ্তার

রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুর এলাকায় প্রায় এক সপ্তাহ আগে ধর্ষণের শিকার হয় ছয় বছর বয়সী এক শিশু। সে সময় অপরাধীকে ধরার মতো কোনো ক্লু পুলিশের কাছে ছিল না। তাদের কাছে ছিল শুধু সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ফুটেজ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই দিনই ধর্ষণের শিকার শিশুটির হাত ধরে আছেন মাস্ক পরা এক যুবক।
ভিডিও ফুটেজে দেখা ব্যক্তি, আঁকা স্কেচ ও স্কেচ দেখে গ্রেপ্তার করা ধর্ষক। (বাম দিকে থেকে)

রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুর এলাকায় প্রায় এক সপ্তাহ আগে ধর্ষণের শিকার হয় ছয় বছর বয়সী এক শিশু। সে সময় অপরাধীকে ধরার মতো কোনো ক্লু পুলিশের কাছে ছিল না। তাদের কাছে ছিল শুধু সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ফুটেজ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই দিনই ধর্ষণের শিকার শিশুটির হাত ধরে আছেন মাস্ক পরা এক যুবক।

এরপর কী করবে ভাবতে ভাবতে স্কেচ করার ব্যাপারটি মাথায় আসে পুলিশের। তৎক্ষণাৎ তারা ফুটেজটি একজন পেশাদার শিল্পীকে পাঠায়। ফুটেজ দেখে মাস্ক পরা ওই যুবকের সম্ভাব্য স্কেচ আঁকেন ওই শিল্পী। এরপর ওই স্কেচটা কালার প্রিন্ট করে মুরাদপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া হয়। এর মধ্যেই এক জন জানান, তিনি ওই যুবককে চেনেন। পরে সূত্র ধরে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার ওই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আজ শনিবার বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি, শ্যামপুর জোন) শাহ আলম।

তিনি বলেন, ‘রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুর এলাকায় গত ২৫ এপ্রিল হঠাৎ ছয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও না পেয়ে মসজিদের মাইকে তার নিখোঁজের ব্যাপারে ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে মুরাদপুরেরই একটি পাঁচ তলা ভবনের চিলেকোঠায় আহত অবস্থায় পাওয়া যায় শিশুটিকে। তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

‘পুলিশের হাতে তেমন কোনো তথ্য-উপাত্ত ছিল না। অভিযানে নেমে পুলিশ প্রথমেই মুরাদপুর এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। ১৬টি সিসি ক্যামেরার ২০-২৫ এপ্রিলের ফুটেজ পর্যালোচনা করে সন্দেহভাজনদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু, অপরাধীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ২৫ এপ্রিলের একটা ফুটেজে পাঁচ তলা ওই ভবনটির সামনে ভুক্তভোগী শিশুর হাত ধরে থাকতে দেখা যায় এক যুবককে। কিন্তু, মাস্ক পরে থাকায় তাকে পুরোপুরি চেনা যাচ্ছিল না। এরপরেও স্থানীয়দের কাছে যাওয়া হয়, তারা কেউ মাস্ক পরা যুবককে চিনতে পারছেন কি না। কিন্তু, কেউই তাকে চিনতে পারেননি’, বলেন তিনি।

শাহ আলম বলেন, ‘এরপর কী করবে ভাবতে ভাবতে স্কেচ করার ব্যাপারটি মাথায় আসে পুলিশের। তৎক্ষণাৎ তারা ফুটেজটি সাখাওয়াত তমাল নামে এক পেশাদার শিল্পীকে পাঠায়। ফুটেজ দেখে মাস্ক পরা ওই যুবকের সম্ভাব্য স্কেচ আঁকেন ওই শিল্পী। এরপর ওই স্কেচটা কালার প্রিন্ট করে মুরাদপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া হয়। এর মধ্যেই এক জন জানান, তিনি ওই যুবককে চেনেন। পরে সূত্র ধরে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার ওই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’

তিনি জানান, ওই যুবকের বাসা মুগদায়। মুরাদপুরে তার নানা ও এক খালার বাসা আছে। মাঝেমধ্যেই তিনি ওই এলাকায় যেতেন।

‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের অপরাধ স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার যুবক’, যোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৫ এপ্রিলই ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা থানায় মামলা দায়ের করেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

9h ago