নোয়াখালীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক চোরাকারবারি নিহত
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় গভীর রাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১২ মামলার আসামি এক মাদক চোরাকারবারি নিহত হয়েছেন। নিহত সায়েম ফিরোজ (৪১) উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে।
এ ঘটনায় দুই কর্মকর্তাসহ পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার খিলপাড়া রহিম হাজী বাড়ির সামনে মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে পুলিশের এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। নিহত ফিরোজের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি প্রস্তুতিসহ ১২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
চাটখিল থানা পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে ২টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫ রাউন্ড কার্তুজ, ৩২ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও ৪০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, চাটখিল থানা পুলিশের একটি দল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে মাদক উদ্ধারের জন্য উপজেলার খিলপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশের দলটি রাত ২টার সময় স্থানীয় রহিম হাজী বাড়ির সামনে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক চোরাকারবারিদের একটি দল পুলিশের গাড়ি লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ৫৬ রাউন্ড পিস্তল ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে এ বন্দুকযুদ্ধ চলে। এক পর্যায়ে মাদক চোরাকারবারিরা পিছু হটে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ এক যুবককে স্থানীয় এলাকাবাসী সায়েম ফিরোজ বলে শনাক্ত করে। রোববার ভোর ৪টার সময় চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক জসিম উদ্দিন, এএসআই এমরান আলী ও সদস্য সোহেল রানা আহত হন।
বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় চাটখিল থানার উপপরিদর্শক মো. শহিদ আলম বাদী হয়ে আজ সকালে চাটখিল থানায় হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, অস্ত্র, মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ৩টি মামলা দায়ের করেন।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোববার রাত ৩টার দিকে চাটখিল থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্য সায়েম ফিরোজ নামের এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তিনি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
চাটখিল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মিনতানুর রহমান বলেন, ‘মাদক এর একটি বড় চালান পাচারের খবর পেয়ে চাটখিল থানা পুলিশ গতকাল মধ্যরাতে খিলপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশের ওপর মাদক চোরাকারবারিরা এলাপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে। এসময় মাদক চোরাকারবারি সায়েম ফিরোজ নিহত হয়।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বন্দুকযুদ্ধে ১২ মামলার আসামি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহত সায়েম ফিরোজের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও ডাকাতিসহ ১২টি মামলা রয়েছে। জেলাকে মাদক, অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে পুলিশের মাদকবিরোধী এ অভিযান চলমান থাকবে। মাদক চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে পুলিশ বদ্ধ পরিকর।’
Comments