গাজীপুরে ২ গার্মেন্টস শ্রমিকের করোনা শনাক্ত
গাজীপুরে দুজন গার্মেন্টস শ্রমিকের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। আজ রবিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) সিদ্দিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসপি সিদ্দিকুর রহমান জানান, ২৪ ও ৩৫ বছর বয়সী ওই দুজনের একজন গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর গাছা এবং অপরজন মুদাফা এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাদেরকে যথাক্রমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আক্রান্ত এক শ্রমিক জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করে বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। করোনার এ দীর্ঘ ছুটি পেয়ে আমি গত ২৩ এপ্রিল গ্রামের বাড়ি যাই। সেখানে গিয়ে আমার বুক ও গলা জ্বালা পোড়া দেখা দেয়। পরে স্বাস্থ্য কর্মীরা বাসায় গিয়ে করোনা সংক্রমন পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে যায়। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই আমি গ্রামের বাড়ি থেকে ২৮ এপ্রিল গাজীপুরে ফিরে আসি। গত শুক্রবার রংপুর থেকে ফোনে আমাকে জানানো হয় আমি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি। পরে কারখানার কাজে যোগ না দিয়ে শনিবার রাতে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। গাজীপুর থেকে রংপুরে গিয়েই তার দেহে করোনার সংক্রমন লক্ষণ ধরা পড়েছে।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ডেপুটি ডাইরেক্টর) ডা. তপন কুমার সরকার জানান, এ হাসপাতাল এখন কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে শুধু করোনা পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশনে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। করোনা পজিটিভ ছাড়া অন্য কাউকে এখানে ভর্তি করা হচ্ছে না।
আক্রান্ত অন্য শ্রমিক জানান, ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার পর ২৪ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষা দেয়া হলে দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন নেগেটিভ আসে। শুক্রবার গ্রামের বাড়ি থেকে টঙ্গীর বাসায় ঢুকতে গেলে বাসার মালিক করোনা পরীক্ষা ছাড়া ঢুকতে দেবে না বলে জানান। পরে স্থানীয় টঙ্গী গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নমুনা দেই। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানায় দেহে করোনা পজিটিভ রয়েছে। বাড়ি থেকে আসার পর আর কারখানায় যোগ দেইনি।
টঙ্গীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. নাজিম উদ্দিন আহমদ জানান, তারা র্যাপিড এন্টিবাডি দিয়ে একাধিকবার পরীক্ষা করে তার দেহে করোনা পজিটিভ পেয়েছেন। তাই তাকে এ হাসপাতালেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপাতি এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, খবরটি শুনেছি। এ নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। ওই শ্রমিকদের করোনা সংক্রমণের প্রকৃত উৎস ও তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একটি কারখানার পরিচালক জানান, ওই শ্রমিকের মধ্যে কোনো প্রকার উপসর্গ দেখা যায়নি। তারপরও সন্দেহজনকভাবে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয় টেস্ট করার জন। কিন্তু, তিনি আক্রান্ত কি না সে প্রতিবেদন এখনও আমাদের কাছে আসেনি।
Comments