পুলিশের এক নির্ভিক সদস্য বাহাউদ্দিনের করোনাযুদ্ধ
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে দিন-রাত এক করে কাজ করতে হচ্ছে পুলিশকে। সামনের সারিতে থেকে এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যে পুলিশের সহশ্রাধিক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত সহকর্মীদের সেবায় এক পুলিশ সদস্য নিরলসভাবে কাজ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন।
অকুতোভয় এই পুলিশ সদস্যের নাম মো. বাহাউদ্দিন। তিনি ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম-উত্তর) বিভাগের মেডিকেল সহকারী। রাত-দিন যখনই প্রয়োজন পড়ছে তিনি আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের হাসপাতালে আনা-নেয়াসহ তাদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন হাসিমুখে।
এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন করোনা রোগীকে নিজের হাতে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন বাহাউদ্দিন। গুরুতর অসুস্থ পুলিশ সদস্যদের তিনি কাঁধে তুলে নামিয়েছেন বহুতল ভবন থেকে, হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
২০১৫ সালে কনস্টেবল পদে চাকরিতে যোগ দেওয়া বাহাউদ্দিন বলেন, ‘প্রথমদিকে খুব ভয় পেতাম করোনাআক্রান্তদের কাছে যেতে। কিন্তু দেশের এই চরম সংকটে আমার পক্ষে বসে থাকা সম্ভব হয়নি।’
‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে আমার পুলিশের লোকজন যখন ব্যাপকহারে আক্রান্ত হচ্ছিল, তখন আমার মন থেকে সব ভয় দূর হয়ে যায়। আমি হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার বাবা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন। আমিও দেশের ডাকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছি।’
বাহাউদ্দিন জানান, তিনি যথারীতি স্বাস্থ্যবিধি মেনে, পিপিই ও মাস্ক পরিধান করেই আক্রান্তদের সেবা করে যাচ্ছেন। সারাক্ষণ আক্রান্তদের সংস্পর্শে থাকায় তিনি নিজেও টেস্ট করেছেন। তার করোনা নেগেটিভ এসেছে।
পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (উত্তর) এর অতিরিক্ত উপকমিশনার রহিমা আখতার লাকি তার প্রশংসা করে বলেন, ‘বাহাউদ্দিনের সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। অল্প বয়সী হয়েও সে যে সাহসিকতা প্রদর্শন করে করোনা আক্রান্তদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন, তা অতুলনীয়।’
Comments