‘আটক করে, মামলা দিয়ে যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক’

করোনা মহামারির মধ্যে সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট, লেখকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি।
কমিটির পক্ষ থেকে আজ এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘করোনার ভয়াবহ দুর্যোগকালে এ অধিকার চর্চার কারণে মানুষকে তুলে নিয়ে, আটক করে, মামলা দিয়ে যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। …এটি করোনা মোকাবিলায় সরকারের আন্তরিকতা ও সামর্থ্য সম্পর্কে মানুষকে আরও সন্দিহান ও অসহায় করে তুলবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিকের পাঠানো এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন— সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. শাহদীন মালিক, জেড আই খান পান্না, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ড. আহসান মনসুর, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, খুশী কবির, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ড. রুশাদ ফরিদী, ড. শহিদুল আলম, অধ্যাপক ফিরদাউস আজিম, ফরিদা আখতার, অধ্যাপক পারভীন হাসান, শিরীন প হক, লুবনা মরিয়ম, আদিলুর রহমান খান, ওমর তারেক চৌধুরী, জাকির হোসেন, হাসনাত কাইয়ুম, নূর খান লিটন, সিনথিয়া ফরিদ, সাদাফ নূর, রেজাউর রহমান লেনিন, জিয়াউর রহমান, অরূপ রাহী ও হানা সামস আহমেদ।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, গত ৫ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনামূলক পোস্ট দেওয়ায় অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য ও করোনা-দুর্গতদের স্বেচ্ছাসেবায় নিয়োজিত দিদারুল ইসলাম ভু্ইয়া, মিনহাজ মান্নান ইমন, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে আটক করেছে র্যাব। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনাকালে ত্রাণ বিতরণ, ধান কাটা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার অনিয়মের বিষয়ের পর্যালোচনা এবং সমালোচনা করার দায়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। আমরা সরকারের এ সকল দমনমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং গ্রেফতারকৃত সকলের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি।’
‘আমরা দিদারুল ইসলাম, আহমেদ কবির কিশোর, মুশতাক আহমেদ, শফিকুল ইসলাম কাজলসহ সকলের বিরুদ্ধে হয়রানীমুলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারের শিকার ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি চাই। করোনা মহামারিকে যেভাবে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের মহোৎসবে রূপান্তর করা হচ্ছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বাকস্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহ সকল নিপীড়নমূলক আইন প্রয়োগে সরকারকে বিরত থাকার দাবি জানাচ্ছি।’
Comments