করোনাভাইরাস

যশোরাঞ্চলে ২ হাজার টেইলার্স-কর্মচারীর মানবেতর জীবন

ছবি: স্টার

করোনার কারণে যশোরাঞ্চলে দুই হাজার টেইলার্সের কর্মচারী মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। টানা দেড় মাস ঘুরছে না তাদের সেলাই মেশিন। থমকে গেছে জীবনজীবিকা। অন্যসব ব্যবসায়ীদের মতো বিপাকে টেইলার্স মালিকরাও।

যশোরের এইচএমএম রোড, কালেক্টরেট মার্কেটসহ শহরের বিভিন্নস্থানে বিক্ষিপ্তভাবে পাঁচ থেকে ছয় শ টেইলার্সের দোকান রয়েছে। সেখানে প্রায় দুই হাজার কর্মচারী সাপ্তাহিক ও মাসিক বেতনে কাজ করেন টেইলার্সের মূল ব্যবসা ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে। কাটিং মাস্টার, কারিগরসহ অন্যান্যরা দিনরাত শ্রম দিয়ে সব অর্ডারের কাজ শেষ করেন ঈদের আগেই।

শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, স্যুট, সেলোয়ার-কামিজসহ বাহারি সব পোশাক বানাতে জুড়ি নেই টেইলার্স কারিগরদের। প্রতিটি দোকানে কয়েক লাখ টাকা লেনদেন হয় রমজান মাসেই। এক মাসের আয় থেকেই পুরো বছরের বিনিয়োগ তুলে আনেন মালিকপক্ষ। কিন্তু, এ বছর সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়েছে করোনাভাইরাস।

আয়ের পথ বন্ধ থাকায় কোনো কোনো মালিক বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতা করলেও অনেকেই কোনো সহায়তা পাননি এখনও। আর যা পেয়েছেন তা একেবারেই যৎসামান্য। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা দর্জিরা।

৭০ বছর বয়সী সিদ্দিকুর রহমান মোমিননগরের সামনে একটি সেলাইমেশিন নিয়ে কাজ করতেন। কাজ বন্ধ থাকার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি কোনো সহায়তা পাননি। এলাকার মেম্বরের কাছে গিয়েছিলেন খাদ্য সহায়তা পাওয়ার আশায়। কিন্তু, খালি হাতে তাকে ফিরতে হয়েছে।

তার অভিযোগ, এলাকার মেম্বর-চেয়ারম্যান পরিচিত লোকদেরকেই সহায়তা করছেন। উপায় না পেয়ে তিনি এখন মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হয়েছেন।

স্টাইল অ্যান্ড সানমুন টেইলার্সের মালিক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে ২৬ মার্চ থেকে দোকান বন্ধ। দোকানের ১২ কর্মচারীর সঙ্গে আমিও মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

‘অন্য সেক্টরের মতো সরকার যদি অল্প সুদে আমাদের জন্যেও ঋণের ব্যবস্থা করে তবে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে এ ব্যবসা,’ যোগ করেন তিনি।

টেইলার্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন মুন্না জানান, তাদের সমিতির ৫৪টি দোকান রয়েছে। যেখানে সাড়ে তিনশ কর্মচারী কাজ করেন। প্রতিবছর তারা রমজানের অপেক্ষায় থাকেন। শবে বরাতের রাত থেকেই অর্ডার আসতে থাকে। ব্যাপক ব্যস্ততার মধ্যে খাওয়া ঘুমের কথা মনে থাকে না কারিগরদের।

বলেন, ‘রমজান মাসের আয় দিয়ে মালিক-কর্মচারীদের কয়েক মাসের খরচ মিটে যায়। অথচ এ বছরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। শিল্প-কারখানাগুলো অল্প সুদে ঋণ পাচ্ছে। কিন্তু, ব্যবসার আওতায় টেইলার্স না থাকায় দুশ্চিন্তায় আছি।’

দেশের টেইলারিং ব্যবসাকেও সরকারি প্রণোদনার মধ্যে আনার অনুরোধ জানিয়ে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘এর ফলে সারা দেশে টেইলার্সেল মালিক-কর্মচারীর উপকৃত হবেন।’

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque announces suspension of protest for 48 hours

He made the announcement while talking to the party men in front of Kakrail mosque this afternoon

5m ago