ঠাকুরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ওরা

‘ত্রাণ গ্রহণ মানে ঘণ্টাব্যাপী লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নয়’— এমন ভাবনা মনে ধারণ করে ঠাকুরগাঁওয়ে এক শ পঁচিশ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে একদল তরুণ-তরুণী।
এক শ পঁচিশ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

‘ত্রাণ গ্রহণ মানে ঘণ্টাব্যাপী লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নয়’— এমন ভাবনা মনে ধারণ করে ঠাকুরগাঁওয়ে এক শ পঁচিশ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে একদল তরুণ-তরুণী।

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে এসএসসি পাশ করা কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থী মিলে এই উদ্যোগ নিয়েছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষকে সহায়তার এই উদ্যোগকে এসএসসি ব্যাচ-২০০৮ আখ্যা দিয়েছে ‘উপহারসামগ্রী বিতরণ’ হিসেবে।

এই ব্যাচেরই একজন সানোয়ার পারভেজ পুলক। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ সরবরাহ করে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। কার্যক্রমের শুরুতেই ‘অসহায় এই মানুষগুলো সহায়তা গ্রহণে যেনো হীনমন্যতায় না ভোগেন বা অসম্মানিত বোধ না করেন’— এই বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

সেই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় এই তরুণ-তরুণীর দল যে যার বাড়ির আশপাশের কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষগুলোকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান। গতকাল বিকালে তারা সেখানে উপস্থিত হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাদের চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়। তবে, সংগঠকদের জন্য বসার ব্যবস্থা বা আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি।

শুধু উপহারসামগ্রী বিতরণের শুরুতে সানোয়ার পারভেজ পুলক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে আপনাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটেছে। আর কাজ বন্ধ থাকায় অনেকেই সাময়িকভাবে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন।’

‘আমরা আপনাদের স্বজন। আর তাই আজকে আমাদের পক্ষ থেকে সামান্য উপহার আপনাদের কাছে তুলে দেবো বলে  আপনাদের এখানে আসতে বলেছি। আমাদের অনুরোধ আপনারা আন্তরিকভাবে তা গ্রহণ করবেন।’

এরপর আট কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি চিনি, এক কেজি আদা, এক কেজি ছোলা, এক লিটার সোয়াবিন তেল, আধা কেজি লবণ, পঁচিশ গ্রাম খেজুর ও সাবান সম্বলিত একটি করে প্যাকেট তাদের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

শহরের ঘোষপাড়ার মধ্যবয়সী এক গৃহিণী বলেন, ‘স্বামীর কাজকর্ম বন্ধ থাকায় অসুবিধার মধ্যে দিন যাচ্ছে। এর মধ্যে ধারদেনাও হয়ে গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ত্রাণ নিতে যেতেও সংকোচ হয়। আজ ছেলেদের আন্তরিকতায় আমার মন ছুঁয়ে গেছে।’

সদর উপজেলার গড়েয়া এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই অসময়ে অনেক সম্মানের সঙ্গে ছেলেগুলোর দেওয়া এই সহযোগিতা আজীবন মনে থাকবে।’

এই ব্যাচেরই একজন ডাকসুর সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই ক্রান্তিলগ্নে নিজেদের উদ্যোগে কিছু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াব, এই চিন্তার শুরুতেই আমরা বন্ধুরা সিদ্ধান্ত নেই, খাদ্য সহায়তা করতে গিয়ে কোনোভাবে কেউ যেন অসম্মানিত বোধ না করেন।’

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

Now