বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই শরণখোলার বেড়িবাঁধে ভাঙন

ছবি: স্টার

এখনও শুরু হয়নি বর্ষা মৌসুম বা অতিরিক্ত বৃষ্টি। কিন্তু, তার আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫-১ পোল্ডারের বাগেরহাটের শরণখোলা অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকালে বলেশ্বর নদীর পাড়ের গাবতলা-বগী গ্রাম সংলগ্ন বাঁধের ৪০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এ খবর জানতে পেরে বেড়িবাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের (সিইআইপি) কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ভাঙা স্থানে জরুরি ভিত্তিতে একটি রিং বেড়িবাঁধ দেওয়ার আশ্বাস দেন।

স্থানীয়রা দাবি করেছেন, অতিদ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে শরণখোলা উপজেলার গাবতলা ও বগী দুই গ্রামের অনেক অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, ‘বাবা-দাদার জমি সব বলেশ্বর নদীর ভাঙনে চলে গেছে। আজ সকালে হঠাৎ করে দুই বিঘা জমিসহ বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। ভাঙনের কবলে পরে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। যত দ্রুত সম্ভব নদী শাসন করে এখানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, ‘সিডরের পরে আমাদের একটাই দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। শরণখোলাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। কিন্তু, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বগী ও গাবতলা গ্রাম অরক্ষিত থেকে গেছে। নদী শাসন না করার কারণে এই দুই গ্রামের বেড়িবাঁধ বার বার ভেঙে যায়। প্রতি বছর বৃষ্টির মৌসুমে ভাঙলেও, এবার একটু আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এলাকার জমি ও ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’

সিইআইপির প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আকস্মিক ভাঙনে প্রায় ৪০ মিটার জায়গা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যত দ্রুত সম্ভব এখানে একটি রিং বেড়িবাঁধ দেওয়া হবে। রিং বেড়িবাঁধ দেওয়ার পরে একটি টেকসই বাঁধ নির্মিত হবে।’

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘৩৫/১ পোল্ডারের অধিকাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বগী ও গাবতলা এলাকার দুই কিলোমিটার অংশে নদী শাসন ও জমি অধিগ্রহণজনিত কিছু সমস্যা আছে। এ কারণে ওই স্থানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। তারপরেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা যায়। শনিবার থেকে রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরকার উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি) নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। জমি অধিগ্রহণের পর ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারিতে বেড়িবাঁধ ও সুইচগেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাাঁধের প্রায় ৬০ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নদী শাসন না করায় শরণখোলা উপজেলার বগী  ও গাবতলা গ্রামের দুই কিলোমিটার অংশে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধ ভাঙন অব্যাহত আছে।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

2h ago