বাড়িওয়ালার ছেলের দেওয়া আগুনে দগ্ধ

মা-সন্তান কাউকেই বাঁচানো গেল না

Kushtia
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কুষ্টিয়ায় ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে বাড়িওয়ালার ছেলের দেওয়া আগুনে দগ্ধ নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

চিকিৎসকরা জানান, সন্তান জন্ম দেওয়ার পরেই তিনি মারা যান। তার সন্তানটিও মৃত ছিল।

মারা যাওয়া নারীর নাম জুলেখা (৩৫)। স্বামী মেহেদী হাসানসহ তিনি কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকায় নবীন প্রামানিক স্কুলের পাশে ফজলুল হকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তার স্বামীর শ্বশুর বাড়ি মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া সেন্টার এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল সকালের দিকে জুলেখা তার বাড়ির বাইরে দুই জন নারীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। সে সময় হঠাৎ বাড়ির মালিকের বড় ছেলে রোকনুজ্জামান রনি এসে জুলেখার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। জুলেখার চিৎকার শুনে অন্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে রেফার করা হয়।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত রনিকে গ্রেপ্তার করেছে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। এ তথ্য দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ঘটনা তদন্ত করে জানা যায়, বকেয়া ভাড়ার কারণে জুলেখার সঙ্গে বাড়ির মালিকের স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে রনির সঙ্গে তার হাতাহাতিও হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই রনি তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।’

এসপি এসএম তানভীর আরাফাত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অপরাধী ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট দিয়ে তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।’

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আগুনে জুলেখার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যায়। তাকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিবার অর্থের যোগান দিতে না পারলেও এগিয়ে আসেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত। তিনি ব্যক্তিগতভাবে অর্থ দেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (সদর সার্কেল) অর্থ সংগ্রহের নির্দেশ দেন। এসপির নির্দেশে এএসপির তত্ত্বাবধানে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মিলে প্রয়োজন মতো টাকা তুলে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তাকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। একইসঙ্গে চিকিৎসার জন্য কিছু নগদ অর্থের ব্যবস্থাও করে দেন তারা।’

‘ঢাকায় চিকিৎসার এক পর্যায়ে গত ৭ মে জুলেখাকে কুষ্টিয়ায় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ মৃত সন্তান জন্ম দিয়ে আজ তিনিও মারা যান’, বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank governor Ahsan H Mansur's remarks

Bangladesh in ‘intensive discussion’ with UK to recover laundered money: BB governor

Mansur said Bangladesh had requested mutual legal assistance from several countries, including the UK

2h ago