কুমিল্লা অঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন
চলতি বছর কুমিল্লা অঞ্চলে বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লায় এ বছর এক লাখ ৫৭ হাজার ৬৩৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। যা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
জেলার বুড়িচং উপজেলার বিআর-২৮ ধানে শীষ মরার অভিযোগ থাকলেও সদর, লালমাইসহ অন্য অঞ্চলে এ রোগের প্রকোপ তেমন দেখা যায়নি।
বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম ও ভারেল্লা ইউনিয়নের কুসুমপুর গ্রামের কৃষক শিরু মিয়া বিআর-২৮ ধানের শীষ মরার অভিযোগ করেন। স্থানীয় কৃষি দপ্তরের পরামর্শে ঔষধ ছিটিয়েও ফল আসেনি বলেও উল্লেখ করেন তারা।
লালমাই উপজেলার নাওরা গ্রামের কৃষক জনাব হোসেন জানান, এ বছর ধানের উৎপাদন গতবারের চেয়ে বেশি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে লালমাই উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘অঞ্চল ভেদে বিআর-২৮ ধানে ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ থাকলেও লালমাই অঞ্চলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ১০-২০ শতাংশ বেশি ফসল উৎপাদিত হয়েছে। হাওর অঞ্চলে ধান কাটা হয়ে গেলেও এখানে হাইব্রিড ধানের চাষাবাদের কারণে দেরিতে ধান কাটা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে মাঠে ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটের কারণেও ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় চল্লিশ শতাংশ জমির ধান কেটেছে কৃষক। আর আগামী এক সপ্তাহে ৯০ শতাংশ কাটা হয়ে যাবে। লকডাউন থাকায় এবার অন্যান্য জেলা থেকে কুমিল্লায় শ্রমিকও এসেছে কম। এছাড়া আধুনিক ধান কাটার মেশিনের অপ্রতুলতা আছে।’
কুমিল্লা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম টুটুল বলেন, ‘এ বছর সরকার কুমিল্লা সদর উপজেলায় কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়নে ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টর প্রদান করেছে। এ ছাড়াও, সরকার আরও উদ্যোগ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছে।’
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সুরজিত চন্দ্র দত্ত বলেন, ‘এ অঞ্চলে বোরো মৌসুমে সাধারণত হাইব্রিড, উফসি এবং স্থানীয় জাতের ধান চাষ হয়। তবে ব্লাস্ট রোগের কারণে বিআর-২৮, ২৯ ও ৫৮ ধান চাষে কম উৎসাহ দেওয়া হয়। সময় মতো ধান কাটতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক আনার পাশাপাশি মেশিন দিয়ে ধান কাটার কাজে কৃষককে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ বছর ধানের ফলনের প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, হাইব্রিড ধানের গড় উৎপাদন ৪ দশমিক ৯৯ মেট্রিক টন, উফসি ধানের ৩ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন ও স্থানীয় জাতে দুই মেট্রিক টন ধান হেক্টর প্রতি উৎপাদিত হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দ্রুতই বাম্পার ফলনের ধান ঘরে তোলা যাবে।’
Comments