বোরো ধানে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ, হতাশায় কৃষক

বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার সময় এখন। অথচ ঠিক এই মুহূর্তে লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধানের খেতে ছত্রাকজনিত ‘লেট ব্লাইট’ রোগ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। যে কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে বোরো খেতে ছত্রাকজনিত ‘লেট ব্লাইট’ রোগ দেখা দিয়েছে। ছবি: স্টার

বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার সময় এখন। অথচ ঠিক এই মুহূর্তে লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধানের খেতে ছত্রাকজনিত ‘লেট ব্লাইট’ রোগ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। যে কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের কৃষক আলী আহমেদ বলেন, ‘আমার দুই বিঘা জমির বোরো ধানের খেতে হঠাৎই লেট ব্লাইট রোগ আক্রমণ করেছে। রাতারাতি পুরো খেতের ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। ওষুধ ছিটিয়েছি। কিন্তু, কোনো কাজে আসছে না।’

‘এবার করোনা দুর্যোগের কারণে সময়মতো বোরো ধানের খেতের যত্ন নেওয়া হয়নি এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় সার ও কীটনাশকও দেওয়া হয়নি। তবে, আমার অন্য খেতে এ রোগ আক্রমণ করেনি। ওইসব খেতের ধান ভালোই আছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কেটে ঘরে তুলবো’, বলেন তিনি।

একই গ্রামের কৃষক আজাহার আলী বলেন, ‘আমার প্রায় চার বিঘা বোরো ধানের খেতে লেট ব্লাইট ধরেছে। রাতারাতি জমির ধান শুকিয়ে গেছে। কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়েও কোনো ফল পাচ্ছি না।’

‘কয়েকদিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি চলছে। আর এরই মধ্যে লেট ব্লাইট রোগে জমির ধান মরে যাচ্ছে। মাঠজুড়ে সোনালি রঙের ধানে এ রোগ কৃষকদের হতাশ করে তুলছে’, বলেন একই গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ‘এ ধান ঘরে তুলতে না পারলে অনেক বিপদে পড়তে হবে।’

একই উপজেলার পলাশী গ্রামের কৃষক মেছের আলী বলেন, ‘গ্রামে কিছু কিছু বোরো খেতে লেট ব্লাইট রোগের আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় তা খুব কম। এ বছর করোনার কারণে খেতের যত্ন নেওয়া হয়নি। কিন্তু, ফলন দেখে মনে হচ্ছে বাম্পার।’ 

‘আমার এক বিঘা জমির কিছু অংশে লেট ব্লাইট দেখা দেওয়ায় তাৎক্ষণিক ওই অংশের ধানের গাছ শেকড়সহ উপড়ে ফেলে দিয়েছি’, বলেন তিনি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ মৌসুমে ৪৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন ধান।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলী নূর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কিছু কিছু এলাকায় বোরো খেতে লেট ব্লাইট রোগ দেখা দিয়েছে। যদিও এটার পরিমাণ খুবই কম, তবে, এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কীটনাশক ছিটিয়ে কোনো ফল আসে না। খেতের কোনো অংশে লেট ব্লাইট দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ওই অংশের ধানের গাছ উপড়ে ফেলতে হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago