বাউন্সার মারার জন্য সুজনকে খুঁজছিলেন ওয়াসিম
১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে দারুণ অলরাউন্ড নৈপুন্যে বাংলাদেশের নায়ক ছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। মিডিয়াম পেসে ৩ উইকেট নেওয়ার পথে ওয়াসিম আকরামকে চোখ রাঙানিও দিয়েছিলেন তিনি। পরের বছর বাংলাদেশে খেলতে এসে শোধ তুলতে সুজনের খোঁজ করেন ওয়াসিম।
খাটো গড়নের সুজনকে পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম ডাকতেন ‘ছোটু’ নামে। রোববার তামিম ইকবালের লাইভ আড্ডায় হাবিবুল বাশার সুমন ও নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে ছিলেন সুজনও। সেখানেই বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের কাছে সেই ম্যাচের স্মৃতি জানতে চান তামিম।
নর্দাম্পটনের সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ করেছিল ২২৩ রান। ৩৪ বলে ২৭ রানের কার্যকরী ইনিংস আসে সুজনের ব্যাট থেকে। রান তাড়ায় পাকিস্তান গুঁড়িয়ে যায় ১৬১ রানে। তাতে ১০ ওভারে ৩১ রান ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরাও হন এই অলরাউন্ডার।
ম্যাচের এক পর্যায়ে রান তাড়া করা পাকিস্তানিদের ৫০ রানের ভেতর ৫ উইকেট পড়ে গেলে তখনকার পাক অধিনায়ক ওয়াসিম সামাল দিচ্ছিলেন বিপর্যয়। ওয়াসিমকে ভড়কে দিতে তাই আগ্রাসী ভূমিকা নেন বলে জানান সুজন, 'তখন আমি ৩ উইকেট পেয়ে গেছি। পাকিস্তানে চাপে। আমাদের হারানোর কিছু ছিল না সেই ম্যাচে। ওয়াসিম আকরাম আমাকে একটা চারও মেরেছিল। তখন ওর চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে ছিলাম। এটার কারণও ছিল।'
এই চোখ রাঙানোর পেছনেও আছে আরেক ঘটনা। এই ম্যাচের আগে নেটে সতীর্থ ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ সুজনের বলে ভাল ভাল শট মারছিলেন। বোলার সুজন এসব শটের প্রশংসা করছিলেন। তখনকার বোলিং কোচ অ্যালান ওয়ার্ডের কথাতেই চোখ রাঙানোর রসদ পান তিনি, 'আমাদের বোলিং কোচ বলেছিল, “তুমি কি ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে এমনটা বলবে?”' মাহমুদ বললেন, “অবশ্যই না।” বোলিং কোচ তখন বললেন, “প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে গালি দেওয়ার দরকার নেই। তবে চোখে চোখে রেখে কথা বলো।”'
সে পরামর্শ পেয়েই ওয়াসিমকে চোখ রাঙিয়েছিলেন সুজন। বিষয়টা হালকাভাবে না দিয়ে ওয়াসিমও রেগে যান, 'তখন সে গালি দিয়ে বলে, আমার দিকে তাকাস ছোটু! সে আকরামের (খান) কাছেও বিচার দেয়, তোর ছোটু আমার দিকে তাকিয়ে আছে!'
বিশ্বকাপের পরের বছর এশিয়া কাপ খেলতে বাংলাদেশে এসছিল পাকিস্তান দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানিরা সে ম্যাচে ৩২১ রানের পাহাড় গড়ে। জবাবে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে খালেদ মাসুদ ব্যাট করতে গেলে ওয়াসিম তার কাছে সুজন কোথায় জানতে চান, ‘“তোদের সেই ছোটুটা কোথায়? সে আজ খেলেনি?” পাইলট উত্তর দিল, “সে তো আউট হয়ে চলে গেছে।” শুনে ওয়াসিম বোধ হয় একটু হতাশই হল, “কখন আউট হয়েছে?, ওকে তো আউট করতে চাইনি, ওকে তো আমার বাউন্সার মারার পরিকল্পনা ছিল।”’
Comments