দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
করোনাভাইরাসের কারণে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের আয়ের অন্যতম উৎস টিউশন এবং খন্ডকালীন চাকরি। আবার অনেক শিক্ষার্থীর পারিবারিক আয় বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। বিপাকে পড়া এসব শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তায় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সংগঠনের পক্ষ থেকে টিউশন ও খন্ডকালীন চাকরি হারানো অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯২১ জন শিক্ষার্থীকে ১১ লাখ ২ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে।’
তিনি জানান, দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থীদের তারা যে অর্থসহায়তা করেছেন, সেটি সংগ্রহ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে আমাদের সংগঠনের যে কমিটি রয়েছে তারাই মূলত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের সাবেকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তহবিল সংগ্রহের কাজটি করছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবেও তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
প্রকাশ্য তহবিল সংগ্রহের জন্য তারা বিকাশ, রকেট, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েছিলেন।
‘সাহায্যপ্রার্থী বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই আমাদের সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাদের বিকাশ বা রকেট নাম্বার দিয়েছে, আমরা তার মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীদের সহায়তা পাঠিয়েছি। অনেক সময় দেখা গেছে কোনও সাবেক শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের সরাসরি সহায়তা করতে চেয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরা সাহায্যপ্রার্থী কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিকাশ বা রকেট নাম্বার তাকে দিয়ে দিয়েছি, উনি সরাসরিই সে নাম্বারগুলোতে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন,’ বলেন হাসান আল মামুন।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, টিউশন ও খন্ডকালীন চাকরি হারানো দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯২১ জন শিক্ষার্থীকে ১১ লাখ ২ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা করেছে সংগঠনটি। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০৭ জন শিক্ষার্থীকে ৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ।
নেত্রকোণার ৫০ দরিদ্র শিক্ষার্থী ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা পেয়েছেন।
এছাড়াও, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, প্রেসক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, 'আমরা জকসু চাই' নামের একটি মঞ্চ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র'র সাথে মিলে প্রায় ৪ লাখ ২২ হাজার টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছে যা পরবর্তীতে ৩১৪ জন শিক্ষার্থীর মাঝে বিতরণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এই তহবিল গঠন করা হয় বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ গঠিত হয়েছিল। পরে ২০১৯ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে এই সংগঠনের প্যানেল থেকে দুজন (ভিপি নুরুল ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন) জয়ী হন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ করা হয়।
Comments