বেতন-বোনাস দাবিতে নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, পুলিশ মোতায়েন
শতভাগ বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। এসময় মালিকপক্ষের লোকজনের ধাওয়ায় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে শ্রমিকেরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ বুধবার সকাল ৭টায় উপজেলার ফতুল্লা পোস্ট অফিস রোডের শাহ ফতেহ উল্লাহ টেক্সটাইল মিল ও জালাল হাজী স্পিনিং মিল কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুটি কারখানায় ৬০ ভাগ বেতন পরিশোধ করা হবে মালিকপক্ষের এমন ঘোষণায় ভোরে কারখানার ভেতরে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের বাকবিতণ্ডা হয়। তখন সংঘর্ষ হতে পারে তবে আমরা গিয়ে পাইনি। পরবর্তীতে যেন আর কোন ঘটনা না ঘটে সেজন্য দুপুর ২টা পর্যন্ত কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।’
শিল্প পুলিশ-৪ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) শেখ বশির আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা শ্রমিকদের ৬৫ ভাগ বেতন পরিশোধ করবে ঘোষণা দিয়েছে। পরে শ্রমিকেরা বাড়িতে চলে যায়।’
আহত শ্রমিকেরা জানান, শাহ ফতেহ উল্লাহ টেক্সটাইল মিলে তিন শিফটে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সকাল ৬টায় মালিকপক্ষ ৬০ ভাগ বেতন পরিশোধ করবে এমন ঘোষণা দিয়ে বেতন পরিশোধের একটি স্লিপ দেয় শ্রমিকদের হাতে। এতে শ্রমিকেরা প্রতিবাদ জানিয়ে শতভাগ বেতন ও ঈদ বোনাস দাবি করে। এ নিয়ে মালিকপক্ষের লোকজনের সঙ্গে শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। শ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান ফটকে ইটপাটকেল ছুঁড়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে মালিকপক্ষের লোকজন শ্রমিকদের ধাওয়া দিলে ৮ থেকে ১০ জন আহত হন।
আহত এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের কারখানা মাত্র ১৮ দিন বন্ধ ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ এখন আমাদের ৬০ ভাগ বেতন দেবে আর ঈদ বোনাস দেবে না। এনিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করলে মালিকপক্ষের লোকজন আমাদের মারধর করে।’
শাহ ফতেহ উল্লাহ টেক্সটাইল মিলের সহকারী ব্যবস্থাপক (শ্রম কল্যাণ) আসলাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যারা কাজ করেছে তাদের ১০০ ভাগ বেতন ও যারা কাজ করেনি তাদের ৬০ ভাগ বেতন দেওয়া হবে ঘোষণা দেয়া হয়। এতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে কারখানার গেট ভাঙচুর করতে থাকে। তখন শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোন শ্রমিককে মারধর করা হয়নি। পরে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
বেতনের বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
‘শাহ ফতেহ উল্লাহ টেক্সটাইল মিল ও জালাল হাজী স্পিনিং মিল’ এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
Comments