বিদেশফেরত স্বামীর হাতে কলেজ শিক্ষার্থী স্ত্রী খুন
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পরকীয়ার জেরে কলেজ শিক্ষার্থী স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুকে (২০) ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে বিদেশফেরত স্বামী আল মামুন মোহনকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় তানজিনার মা ও ছোট ভাইও ছুরিকাঘাতে আহত হন।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পাশ্ববর্তী রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মনতাজ মাস্টারের ছেলে আল মামুন মোহনের সঙ্গে ফরিদগঞ্জের রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামের খাঁ বাড়ির সেলিম খানের মেয়ে গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী তানজিনা আক্তার রিতুর বিয়ে হয়।
বিয়ের এক বছর পর মামুন সৌদি আরব চলে যান। এর দেড় বছর পর তিনি ফেরত এসে বেকার বসে থাকেন। ঘটনার দিন বিকেলে মামুন তার নিজ বাড়ি রায়পুর থেকে শ্বশুড় বাড়ি গৃদকালিন্দিয়ায় আসেন। সেখানে ইফতারের সময় স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর সঙ্গে পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আল মামুন রিতুকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত শুরু করেন। তখন রিতুর মা পারভীন আক্তার (৪৫) ও ভাই প্রান্ত (১৭) চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে আল মামুন তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করেন। পরে আল মামুন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটকে রেখে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই কাজী মো. জাকারিয়া জানান, আল মামুনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তানজিনা আক্তার রিতু ও তার মা পারভীনকে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পারভীন আক্তারকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। আহত ভাই প্রান্তকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রকিব বলেন, ‘আল মামুন পুলিশকে জানিয়েছেন, তার স্ত্রী তানজিনা পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। সে বিদেশ থেকে যে টাকা পয়সা পাঠাতেন সব টাকাই তানজিনা আত্মসাত করেছে। তানজিনা তাকে স্বামী হিসেবেও পাত্তা দিত না। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করেন বলে স্বীকার করেছেন। তানজিনার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে।’
Comments