শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের বিচিত্র উপসর্গ

যুক্তরাষ্ট্রে শতাধিক শিশুর দেহে ‘রহস্যজনক’ উপসর্গ দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবক ও চিকিৎসকরা। কোভিড-১৯ এর ‘অতিসক্রিয়’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে শিশুদের দেহে এমন অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ফাইল ফটো রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে শিশুর দেহে ‘রহস্যজনক’ উপসর্গ দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবক ও চিকিৎসকরা। কোভিড-১৯ এর ‘অতিসক্রিয়’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে শিশুদের দেহে এমন অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

‘অতিসক্রিয়’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পেডিয়াট্রিক মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম বলা হয়ে থাকে।

সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বোস্টন শিশু হাসপাতালের জরুরি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জেফরি বার্নস জানান, চিকিৎসকরা প্রায় ১৫০টি শিশুর দেহে এ ধরনের উপসর্গ দেখেছেন। তাদের অধিকাংশই নিউইয়র্কের বাসিন্দা।

এছাড়াও ওয়াশিংটন ডিসিসহ ১৭টি প্রদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে জরিপ চালিয়ে এরকম আরও শিশুর সন্ধান পেয়েছে সিএনএন।

বার্নস বলেন, ‘মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম সরাসরি ভাইরাসের আক্রমণের কারণে হয় না। ধারণা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা “অতিসক্রিয়” হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটছে।’

এক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, প্রদাহ, এক বা একাধিক অঙ্গের কার্যকারিতা কমে যাওয়াসহ আরও কিছু লক্ষণ রয়েছে।

বোস্টন চিলড্রেন’স হাসপাতালের রিউমাটোলজিস্ট ম্যারি বেথ সন বলেন, ‘এমন উপসর্গ নিয়ে কয়েকটি শিশু হাসপাতালে এসেছে। কয়েকজনের মধ্যে কাওয়াসাকি রোগও দেখা গেছে। আবার কারও কারও সাইটোকাইনের লক্ষণও দেখা গেছে।’

কাওয়াসাকি রোগের কারণে মাঝারি ধরনের রক্তনালীর দেয়ালে প্রদাহ ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ‘অতিসক্রিয়তার’ কারণে সাধারণত সাইটোকাইনের লক্ষণ দেখা দেয়।

নিউজার্সির পোমোনার শিশু বিশেষজ্ঞ গ্লেন বাডনিক বলেন, ‘ভাইরাসের বিরুদ্ধে যখন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে তখন কাওয়াসাকির মতো রোগ হতে পারে।’

লস অ্যাঞ্জেলসের সিড্রাস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের শিশু সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা মোশ আর্ডিটি জানান, শিশুদের চোখ ও জিহ্বা লাল হয়ে যাওয়া, ঠোঁট ফাটার মতো লক্ষণও দেখা গেছে। রক্তনালীর প্রদাহের কারণে এমনটা ঘটে থাকে।

বোস্টন চিলড্রেন’স প্যানেলের কার্ডিওলজিস্ট ও কাওয়াসাকি রোগ বিশেষজ্ঞ জেন নিউবারগার বলেন, ‘হতে পারে সার্স-কোভ-২ এর বিরুদ্ধে শিশুদের যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, সেটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অতিসক্রিয় করছে।’

এদিকে, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে মৃত্যুহার কম। অধিকাংশ শিশুর মধ্যেই গুরুতর উপসর্গ দেখা যায় না। বার্নস বলেন, ‘অধিকাংশ শিশুরই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। প্রচলিত চিকিৎসাপদ্ধতিতেই তাদেরকে সারিয়ে তোলা হচ্ছে।’

শিশুদের ক্ষেত্রে কোভিড ১৯ এর মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম নিয়ে ইতোমধ্যেই পরীক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যাচাই-বাছাইয়ের পর নিশ্চিত হয়ে এ বিষয়ে চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে সিডিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago