ভাতার টাকায় অসহায়ের পাশে মুক্তিযোদ্ধা খালেক

করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের অনেকেই। তাদের ঘরে খাবার নেই। এমন পরিস্থিতিতে এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক।
ব্যাগ ভর্তি খাবার কখনো কাঁধে করে আবার কখনো সাইকেলে নিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। আবার কারো হাতে গুঁজে দিচ্ছেন নগদ টাকা।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মামুদনগরের বাড়িগ্রামের বাসিন্দা। একইসঙ্গে তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করেন। তবে তার বড় পরিচয় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
নিজের অবস্থা যে খুব ভালো তাও নয়। আগে ধান-চালের ব্যবসা করলেও এখন আর করেন না। সংসার চলে যায় তিন ছেলের আয়ে দিয়ে। আর তিনি চলেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিয়ে।
কিছুদিন আগেই ভাতার টাকা পেয়েছেন মাসিক ১২ হাজার টাকা হিসাবে তিনমাসের এককালীন ৩৬ হাজার টাকা। সেই টাকার সব দিয়ে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ছেলেদের বলেছি আপাতত সংসারের সব খরচ তোরা চালিয়ে যা, আমার এবারের ভাতার টাকা অসহায়দের জন্য বিতরণ করবো। ছেলেরাও তাতে না করেননি।’
গতকাল রোববার পর্যন্ত গ্রামের এবং আশেপাশের ৩৮ পরিবারকে ব্যাগ ভর্তি খাবার দিয়েছেন খালেক। প্রত্যেক ব্যাগে ছিল পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক কেজি তেল এবং একটি হাতধোয়ার সাবান। প্রয়োজন বুঝে আরও ১২ পরিবারকে দিয়েছেন নগদ ৫০০ টাকা অর্থ সহায়তা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মসজিদে ইমামতি করি, আমি গ্রামের বাড়ি বাড়ি যাই, তাই কমবেশি সবার ঘরের খবরই আমি জানি।’
তিনি মনে করেন, ‘সরকার যে ত্রাণ দিচ্ছে তা অনেকেই পাচ্ছেন না। দেশের ধনীরা যদি সহায়তার হাত প্রসারিত করেন, তবে অসহায় মানুষের আর পেটের দায়ে ঘরের বাইরে বের হকে হবে না। আমরাও এই মহামারি মোকাবিলায় করতে পারব।’
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী জসিউর রহমান লুকন বলেন, ‘আব্দুল খালেককে আমি চিনি, তার সম্পর্কে জানি। তিনি কখনো অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করেননি। তিনি একজন জনহিতৈষী মানুষ।’
Comments