দুধ বিক্রি করতে পারায় বিরামপুরে খামারিদের স্বস্তি

Dinajpur Map
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিনাজপুরের দুগ্ধ খামারিরা পড়েছেন লোকসানে। অবশেষে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে দুধ বিক্রি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে খামারিদের মধ্যে। পাচ্ছেন ন্যায্য মূল্যও।

দিনাজপুরের বিরামপুরে ছোট-বড় ২৯টি দুগ্ধ খামার রয়েছে। প্রতিদিন এসব খামার থেকে প্রায় ১,৪০০ লিটার থেকে ১,৫০০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়।

খামারিরা জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে উৎপাদিত দুধ বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুধের দাম অর্ধেকেরও নিচে নেমে আসে। অনেক খামারের দুধ বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। এতে করে খামারিদের চরম লোকসানে পড়তে হয়।

বিরামপুরের সবচেয়ে বড় দুগ্ধ খামারি জোতবানী গ্রামের এমআরএফ ডেইরি ফার্মের মালিক মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমার ফার্মের ৩০টি গাভি থেকে প্রতিদিন ৪০০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এর একটি বড় অংশ ব্র্যাক ক্রয় কেন্দ্রে ও মিষ্টির দোকানে বিক্রি করতাম। কিন্তু, করোনার প্রভাবে ব্র্যাক ক্রয় কেন্দ্র দুধ কেনা কমিয়ে দেয়। মিষ্টির দোকানসহ হোটেলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুধ নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়েছে। প্রতিদিনই চরম লোকসান হচ্ছে।’

খামারি আনিসুর রহমান জানান, দুধ বিক্রি করতে না পেরে তিনি গাভির খাবার কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এতে করে দুধ উৎপাদন কমে গেছে। এর প্রভাবে একটি গাভি মারা গেছে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, অন্য গাভিগুলোর দুধ উৎপাদনের সক্ষমতাও কমে গেছে।

পার্শ্ববর্তী উপজেলার দুগ্ধ খামারি বাবু মিয়া বলেন, ‘করোনার কারণে দুধ বিক্রি কমে গেলেও গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। প্রতি বস্তা ভূষি ৮৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১,৩৫০ টাকা, ফিড প্রতি বস্তা ৫৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৫০ টাকা। এছাড়াও, অন্যান্য গো-খাদ্যের দামও বেড়ে গেছে। এতে করে খামারিরা দিশেহারা হয়ে আছেন।’

খামারি ফারুক হোসেন, আনিসুর রহমান ও বাবু মিয়া জানান, দুগ্ধ খামারিদের দুর্দশার কথা জেনে কিছুদিন আগে সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে স্থানীয় মিষ্টির দোকান ও ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করে উৎপাদিত দুধ ন্যায্যমূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করেন। এতে করে দুগ্ধ খামারিদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বিরামপুর ও হাকিমপুরের সবচেয়ে বড় মিষ্টির দোকান পদ্ম কলির মালিক সুবল কুমার ঘোষ জানান, করোনা রোধে সরকারের নির্দেশনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হন তারা। এতে করে কর্মচারীদের ব্যয় নিয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। কিছুদিন আগে সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র পার্সেলে দুধের তৈরি মিষ্টান্ন সামগ্রী বিক্রির ব্যবস্থা করেন। এতে করে দুগ্ধ খামারিরাও যেমন তাদের কাছে দুধ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন, তেমনি তার মতো অন্যান্য মিষ্টির দোকানদারও চরম লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ক্যাপ্টেন আবু আহাদ হিমেল বলেন, ‘দুগ্ধ খামারিদের দুর্দশার কথা জানতে পেরে সেনাবাহিনী উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে উৎপাদিত সব দুধ বিপননের ব্যবস্থা করে।’

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

9h ago