করোনাভয় এড়িয়ে ২ হাজার পাখির খাবার যোগাচ্ছেন পাবনার মিষ্টি ব্যবসায়ী সমর ঘোষ
করোনাভাইরাস মহামারি এড়াতে বন্ধ দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ। ছিন্নমূল-নিম্নবিত্ত মানুষের পাশাপাশি চরম খাদ্য সংকটে পশুপাখিরাও। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার পাখির খাবার যোগান দিচ্ছেন পাবনার মিষ্টি ব্যবসায়ী সমর ঘোষ।
ঘড়ির কাঁটায় ভোর সাড়ে পাঁচটা। করোনাকালের এই আতঙ্কের ভোরে জনশূন্য পাবনার ব্যস্ততম ট্রাফিক মোড়। রেস্তোরাঁগুলোয় জ্বলছে না চুলো, নেই হকারের চিরচেনা হাঁকডাকও। গত কয়েকদিনের এমন অচেনা দৃশ্যে যেন স্তম্ভিত, বিভ্রান্ত পশুপাখিরাও। খাবারের খোঁজে বারংবার আতিপাতি করেও যে মিলছে না কিছুই।
তবে, এমন পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন সকালে এক ব্যতিক্রম দৃশ্যের দেখা মিলছে শহরের শ্যামল দই ভাণ্ডারে। প্রায় এক দশক ধরে শহুরে কর্মজীবী মানুষের পাশাপাশি হাজার দুয়েক শালিকের জন্য প্রাতঃরাশের আয়োজন করেন দোকানের মালিক সমর ঘোষ।
করোনায় রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকলেও নিয়ম করে সমরের অপেক্ষাতেই থাকে এই পাখিগুলো। সন্তানের মতো আগলে রাখা পাখিগুলোকে হতাশ করেননি তিনি। তাই ঝুঁকি থাকলেও এই ঘরবন্দি দিনগুলোতে কেবলই শালিকের জন্য দোকান খুলছেন এই মিষ্টি ব্যবসায়ী।
সমর ঘোষ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে এক দিনের জন্যও সমরের দোকানে বন্ধ হয়নি পাখিদের প্রাতঃরাশ আয়োজন। বন্ধের দিনগুলোর কথা ভেবে আগে থেকেই খাবার তৈরি করে রেখেছি।’
করোনাভয় এড়িয়ে শালিকের প্রতি সমরের এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় মুগ্ধ পরিবেশবিদরাও। পাবনার নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটির সভাপতি সুপ্রতাপ চাকী বলেন, ‘শালিকের প্রতি সমরের এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা প্রকৃতি প্রেমিদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। পাখিরা প্রকৃতির সম্পদ। আমরা সবাই যদি সমরের মতো এগিয়ে আসি তাহলে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাবে না কোনো প্রাণ।’
Comments