বেনাপোলে ১০ মিনিটে শুল্কায়ন, ৯ মিনিটে রিলিজ অর্ডার
মাত্র দশ মিনিটে শুল্কায়ন, নয় মিনিটে রিলিজ অর্ডার। শুল্কায়ন সময় হ্রাসে নতুন রেকর্ড। গত ১৯ মে ১৯ মিনিটে শুল্কায়ন থেকে রিলিজ অর্ডার পর্যন্ত কাজে এ রেকর্ড করে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেনাপোল কাস্টম হাউস।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনবিআর জানিয়েছে, ভারত থেকে ২১টি রেল ওয়াগনে ৭৭৫ মেট্রিক টন ধানবীজ আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। সম্ভাব্য খাদ্য সংকটরোধে ধানবীজ দ্রুত কৃষকের হাতে পৌঁছাতে এ উদ্যোগ নেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী।
এনবিআরের কেন্দ্রীয় কাস্টমস সফটওয়্যার এসাইকুডা ওয়ার্ল্ডের তথ্য মতে, ধানবীজের ওয়াগনগুলো ১৯ মে সন্ধ্যা ৭টা ১৯ মিনিটে বেনাপোল রেলস্টেশনে পৌঁছে। রাত ১১টা ২৭ মিনিটে সিএন্ডএফ এজেন্ট সারথি এন্টারপ্রাইজ সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি রেজিস্ট্রেশন করে। ১১টা ৩৬ মিনিটে রাজস্ব কর্মকর্তা নঈম মীরন শুল্কায়ন অনুমোদন করেন।
নয় মিনিটে সিএন্ডএফ এজেন্ট পরবর্তী সোনালী ব্যাংকে শুল্ককর জমা করেন। ১১টা ৪৬ মিনিটে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান রিলিজ অর্ডার প্রিন্ট করেন।
সব মিলিয়ে ১৯ মিনিটে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে ১০ মিনিটে শুল্কায়ন ও পরবর্তী নয় মিনিটে রিলিজ অর্ডার প্রিন্ট হয়।
রাজস্ব কর্মকর্তা নঈম মীরন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সব আমদানি প্রক্রিয়ায় এটুকুই কাস্টমসের কাজ। শেষ নয় মিনিট সিএন্ডএফ এজেন্টের টাকা জমা দিতে লেগেছে। সব ঠিক থাকলে পাঁচ মিনিটেই আমরা শুল্কায়ন করার দক্ষতা অর্জন করেছি।’
‘কাগজপত্র ঠিক থাকলে কেবল রেলকার্গো নয়, সব ধরনের চালানই দ্রুত শুল্কায়ন করা যায়,’ যোগ করেন তিনি।
আমদানি চালান বৃত্তান্তে দেখা যায়, ভারত থেকে দুইটি চালানে ৭৭৫ মেট্রিক টন ধানবীজ আমদানি হয়। ঢাকার গুলশানের বায়ার ক্রপসাইন্স লিমিটেড ভারতের বায়ার বায়ো সায়েন্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এসব বীজ ক্রয় করে।
সিএন্ডএফ এজেন্ট সারথী এন্টারপ্রাইজ বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে (সি-২১৯৯৩ ও ২১৯৯৪) দি সিটি ব্যাংক গুলশান শাখায় এলসি খোলে। এসব বীজের শুল্ককর ৭৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫০৮ টাকা।
এনবিআর জানিয়েছে, রেলকার্গোতে আমদানি পণ্য দ্রুত শুল্কায়ন ও খালাস করা হয়। সময় ও খরচ সাশ্রয়ের সঙ্গে পণ্যও নষ্ট হয় না। পার্কিং সিন্ডিকেট মাঝপথে ট্রাক আটকে চাঁদাবাজি করতে পারে না। রেলকার্গোতে লকডাউন ও স্বস্থ্যবিধি মেনে আমদানি করায় করোনা ঝুঁকি থাকে না।
বর্তমানে রেলকার্গো সাড়ে ৩ ঘণ্টায় ভারত থেকে বেনাপোলে পৌঁছে। এক ওয়াগনে চার ট্রাকের সমান পণ্য আনা যায়। রেলকার্গোতে মিথ্যা ঘোষণার সুযোগ কম। পাশাপাশি ট্রাকের তুলনায় ভাড়া অর্ধেকেরও কম। আবশ্যিক পার্কিং, ট্রাক অপেক্ষা ও চাঁদাবাজি নেই। দিনে ১০০ বগির একটি ট্রেন ৪০০ ট্রাকের সমান পণ্য আনতে পারে।
এনবিআর আরও জানিয়েছে, ট্রাকে ধানবীজের এ চালানটি আমদানি হলে পাঁচ থেকে ছয় দিন লাগত খালাস পর্যন্ত। এছাড়াও, ৫০টির বেশি ট্রাকের প্রয়োজন হতো।
শুধু তাই নয়, ৫০ জন ড্রাইভারের একজন না এলে পণ্য খালাস বন্ধ থাকতো। বন্দরে ও রাস্তায় যানজট সৃষ্টির কারণ হতো। ট্রাকে একই চালানের ভাড়া দ্বিগুণেরও বেশি। এতে প্রান্তিক ভোক্তা কৃষকের ব্যয় প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে যেত।
Comments