হারিয়ে গেছে হাসি বেগমের মুখের হাসি

নদী ভাঙনের শিকার হাসি বেগমের আশ্রয় হয়েছিল বেড়িবাঁধে। গোলপাতার বেড়া দিয়ে চারটি দেয়াল, কয়েকটি টিন দিয়ে একচালা ঘরে স্বামী সন্তানদের নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছিলেন। ডিঙি নৌকায় মাছ ধরে চলত সংসার। তারপরও হাসি বেগম স্বামী সন্তানদের নিয়ে হাসিখুশি ছিলেন।
ছবি: স্টার

নদী ভাঙনের শিকার হাসি বেগমের আশ্রয় হয়েছিল বেড়িবাঁধে। গোলপাতার বেড়া দিয়ে চারটি দেয়াল, কয়েকটি টিন দিয়ে একচালা ঘরে স্বামী সন্তানদের নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছিলেন তিনি। ডিঙি নৌকায় মাছ ধরে চলত সংসার। তারপরও হাসি বেগম স্বামী সন্তানদের নিয়ে হাসিখুশি ছিলেন।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বুড়াগৌরাঙ্গ নদ সেখানে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে তার পাড়ে বেড়িবাঁধে ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরে স্বামী ছিদ্দিক আকন ও দুই কিশোর ছেলেকে নিয়ে হাসি বেগমের বসবাস। গত ২০ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে উড়ে গেছে তার ঘরের চাল। দুমড়ে-মুচড়ে গেছে পুরো ঘরটি। সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসের পানি ঘরের ভিটার অনেকটাই ভেঙে নিয়ে গেছে।

হাসি বেগম জানান, এক সময় নিজের চাষের জমি ছিল, বাড়ি ছিল। কিন্তু বুড়াগৌরাঙ্গের ভাঙনে এখন তিনি নিঃস্ব। বাধ্য হয়ে নদের বাঁধে তাদের আশ্রয় হয়েছে। স্বামী দুই ছেলেকে নিয়ে নদে মাছ ধরে বিক্রি করে যা পায় তা দিয়েই চলছিল তাদের সংসার। বেশ কিছুদিন ধরে মাছ কম ধরা পড়ছিল। তার ওপর মহামারির কারণে অভাব বেড়ে যায়। কফিনে শেষ পেরেক হয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আশ্রয়ের ঘরটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন প্রতিদিনিই জোয়ারের ঝাপটায় ঘরের ভিটে একটু একটু করে ধুয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে পুরো ঘরটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এই আশঙ্কায় হাসি বেগমের মুখের হাসি হারিয়ে গেছে।

চর মোন্তাজ বেড়িবাঁধের ওপর শুধু হাসি বেগমের ঘরই নয়, চর বেষ্টনী এলাকার বাঁধের ওপর ঝুমুর বেগমের, নয়ার চর এলাকার বাঁধের ওপর খোদেজা বেগম ও হোসনেআরা বেগমের ঝুপড়ি ঘরও আম্পানে নড়বড়ে হয়ে গেছে।

চর মোন্তাজ ইউপি চেয়ারম্যান মো. হানিফ মিয়া জানায়, উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন সাগর মোহনার ইউনিয়ন চর মোন্তাজ। এই এলাকার অধিকাংশ লোক জীবিকার জন্য মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল। নদী ভাঙনে লোকজন নিঃস্ব হয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ে এই পরিবারগুলোর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (এইএনও) মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, চর মোন্তাজ ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি দরিদ্র পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago