সিলেটে বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনায় মামলা
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বালিপাড়ায় ছয়টি শেয়াল, দুইটি বাঘডাশ ও একটি বেজি হত্যার ঘটনায় মামলা করেছে বনবিভাগ।
শনিবার বিকেলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে জৈন্তাপুর থানায় এ মামলা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তরা উপজেলার পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিম (২৫) ও মো. শাহরিয়ার আহমদ (২২)।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল বণিক মামলার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বনবিভাগের সারি রেঞ্জ এর ফরেস্ট রেঞ্জার মো. সাদ উদ্দিন আহমদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
মামলার নথি থেকে জানা যায়, শুক্রবার সকালে উপজেলার ওই গ্রামের স্থানীয়রা বন্যার কারণে লোকালয়ে আশ্রয় নেয়া ৬টি শেয়াল, দুটি বাঘডাশ ও ১টি বেজি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে স্থানীয় কাপনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় বনবিভাগের একটি দল শুক্রবার ও শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ৩৯ ধারা অনুযায়ী এ মামলা করেছেন।
বন্যপ্রাণী হত্যার ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বনবিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘মামলায় হয়তো অভিযুক্তদের খুব বড় কোন সাজা হবে না, তবে অন্তত এ বিষয়টি সবাই জানবে যে বন্যপ্রাণী হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন ও আইনের প্রয়োগের চেয়ে সবার মধ্যে এ বোধ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ’।
সিলেটের উপ-বন সংরক্ষক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর শুক্রবার থেকেই আমাদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করেন এবং স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় খোঁজখবর করে বিস্তারিত জানেন। এর প্রেক্ষিতে এই মামলা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘লোকবল সংকটে বনবিভাগের পক্ষে দেশের বিস্তীর্ণ বনভূমি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সবসময় কার্যকরী ভূমিকা রাখা কঠিন। আর তাই কেবলমাত্র আইনের প্রয়োগ নয়, বরং মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে যে নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই বন্যপ্রাণী হত্যা না করে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে’।
Comments