ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৫ মে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার স্ত্রী নারী নেত্রী শিরীন হক ও তাদের ছেলে বারিশ চৌধুরীরও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তারা বর্তমানে বাসাতেই রয়েছেন।

আজ রোববার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আনোয়ারুল হাফিজ বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, আজ দুপুরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘এখন জ্বর নেই। কাশি আছে, বুকে কফ আটকে আছে। একটু শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অক্সিজেন নিচ্ছি। মানুষের এই বিপদের দিনে বহু কাজ করতে হবে। অনেক কিছু করা বাকি। কিটের এখনো অনুমোদন হলো না। দোয়া করবেন যেন দ্রুত কাজ শুরু করতে পারি।’

গতরাতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নমুনা পরীক্ষা করে ‘জি র‍্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের উদ্ভাবক বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছিলেন, জাফরুল্লাহর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া করোনা রোগীর জন্যে ভালো সংবাদ, যেটা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হয়েছে। তারপরও উনার বয়স, কিডনি সমস্যা ও করোনার কারণে আগামী তিন থেকে চার দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

ডা. জাফরুল্লাহর স্ত্রী শিরীন হক ও ছেলে বারিশ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে ডা. সৈয়দ আনোয়ারুল হাফিজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তার স্ত্রী মোটামুটি ভালো আছেন। বেশ জ্বর আছে। শ্বাসকষ্ট নেই। তার ছেলেও ভালো আছে। তার কোনো সমস্যা নেই।’

‘কিন্তু, (ছেলে) একটু নার্ভাস। কারণ, বাবা-মা দুই জনই করোনায় আক্রান্ত। নিজেও আক্রান্ত। বাড়িতে তিনি একা কী করবেন। এই চিন্তা থেকেই তিনিও বাবা-মাসহ হাসপাতালে থেকেই চিকিৎসা নিতে চাচ্ছেন’, বলেন ডা. সৈয়দ আনোয়ারুল হাফিজ।

তিনি বলেন, ‘এখন তার পরিবার ও আমরা চাচ্ছি হাসপাতালেই তাদের রাখা হোক। আমরা চাচ্ছিলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু, ডা. জাফরুল্লাহ তা চাচ্ছেন না। এটাও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বড় একটা গুণ যে তিনি বলেন, “আমি এই হাসপাতাল তৈরি করেছি, আমি এখানেই চিকিৎসা করাবো। যদি মরতে হয়, এখানেই মরবো।”’

‘এখন পর্যন্ত যে চিকিৎসা প্রয়োজন, তা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালেই দেওয়া হচ্ছে’, যোগ করেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আনোয়ারুল হাফিজ।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরীন হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অন্য কোনো সমস্যা নেই। জ্বরেই কাবু হয়ে গেছি। বাসাতেই আছি। কিন্তু, বন্ধুরা চাপ দিচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্যে। এখনো ঠিক করতে পারিনি কী করব।’

উল্লেখ্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিট দিয়ে পরীক্ষায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিসিআর পরীক্ষাতেও তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন:

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবস্থা ‘স্থিতিশীল’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ

বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ

‘আমি ভালো আছি’

প্লাজমা থেরাপি নিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’

আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন

গণস্বাস্থ্যের কিট, বিজ্ঞানের বিশ্লেষণে দেশীয় রাজনীতি

২৫ দিনে ৩০১ শয্যার করোনা হাসপাতালের জন্ম অথবা অপমৃত্যু!

মুক্তিযুদ্ধ, গণস্বাস্থ্য, ডা. জাফরুল্লাহ ও মাছ চোর

Comments

The Daily Star  | English

Salehuddin urges all to work together to overcome challenges of economy

'We are in the midst of all sorts of challenges,' says the finance adviser

1h ago