করোনা আপডেট: সিলেট, মানিকগঞ্জ, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, ফরিদপুর

Coronavirus-1.jpg
করোনাভাইরাস। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। মানিকগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় আরও ৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও, চাঁদপুরে দুজন ও ফরিদপুরে মারা গেছেন একজন।

সিলেটে হাজার ছাড়াল আক্রান্তের সংখ্যা

সিলেট সংবাদদাতা জানান, বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। বিভাগের চার জেলায় এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৪০ জন।

গতকাল সিলেট ও ঢাকার ল্যাবরেটরির নমুনা পরীক্ষার ফল অনুযায়ী বিভাগে নতুন আরও ৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া।

আক্রান্তদের মধ্যে সিলেট জেলাতেই আছেন ৫৫৫ জন। এ ছাড়াও, সুনামগঞ্জে ১৬৫ জন, হবিগঞ্জে ১৯২ জন এবং মৌলভীবাজারে ১২৮ জন।

বিভাগে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২৭০ জন। চার জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১২৫ জন।

মানিকগঞ্জে আরও ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আরও ২৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৩ জন।

আজ সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।

ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ‘নতুন আক্রান্ত ২৪ জনের মধ্যে সিংগাইর উপজেলার ১১ জন, মানিকগঞ্জ সদর ও ঘিওর উপজেলার চার জন করে, সাটুরিয়া উপজেলায় তিন জন এবং শিবালয় উপজেলার দুজন রয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ পর্যন্ত মোট দুই হাজার ৫১১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ১৪১টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে ১৭৩ জনের।’

আক্রান্তদের মধ্যে ২১ জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ও ১১২ জন নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, অন্যরা সুস্থ হয়েছেন।

এ পর্যন্ত জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আট জন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষ, দুজন নারী এবং একজন কিশোর।

মৌলভীবাজারে একদিনে ৩০ জনের করোনা শনাক্ত

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা জানান, জেলায় একদিনে ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

গতকাল ঢাকার ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় এই ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর মৌলভীবাজার জেলায় একদিনে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্তের ঘটনা।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদ আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘শনাক্তদের মধ্যে ১৮ জনই শ্রীমঙ্গল উপজেলার। বাকিদের মধ্যে কমলগঞ্জের ছয় জন, কুলাউড়ার তিন জন, বড়লেখার দুজন এবং রাজনগরের একজন।’

এই ৩০ জনসহ মৌলভীবাজারে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৮৮ জনের।

একইদিনে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে সিলেটের ২২ জন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে সুনামগঞ্জের ২১ জন ও ঢাকার ল্যাবে হবিগঞ্জের ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দুই জনের মৃত্যু

চাঁদপুর সংবাদদাতা জানান, জেলার হাজীগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃতদের দাফনে অন্যতম যোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম (৪৮) মারা গেছেন।

তিনি উপজেলার করোনাকালীন বিশেষ দাফন টিমের ১১ জন স্বেচ্ছাসেবীর একজন ছিলেন। গতকাল দুপুরে হাজীগঞ্জ পৌরসভার ধেররা বিলওয়াই গ্রামের নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।

তার সহযোগী স্বেচ্ছাসেবী শরীফুল হাছান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাজীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত যারা করোনায় বা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন তাদের লাশ দাফন আমাদের ১১ জনের স্বেচ্ছাসেবী দলের অন্যতম সদস্য রফিকুল ইসলাম আজ নিজেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’

‘তবে মৃত্যুর আগে তার কোনো করোনা উপসর্গ দেখা যায়নি,’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তারপরও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত হয়েই তিনি মারা গেছেন।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোয়েব আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম করোনায় মৃত ব্যক্তিদের কন্ট্র্যাক্ট ট্রেসিং এ ছিলেন। কিন্তু, মৃত্যুর সময় তার কোনো করোনার লক্ষণ দেখিনি। তবুও আমরা তার নমুনা সংগ্রহ করেছি। রিপোর্ট আসলে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এ দিকে গতকাল সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মো. বেলায়েত হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর অক্সিজেন দেওয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’

ফরিদপুরে করোনায় কৃষকের মৃত্যু

ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক কৃষক। এ নিয়ে ফরিদপুরে সাত জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে তিন জনই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।

মারা যাওয়া কৃষকের বয়স ৩০ বছর। তিনি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। তার সাত বছরের একটি মেয়ে আছে। রয়েছে। তিনি গত প্রায় চার বছর ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন।

শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে গত শনিবার তিনি পাশের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা জমা দেন। রবিবার ফরিদপুরের করোনা শনাক্তকরণ ল্যাবে এ নমুনা পরীক্ষা করে তার করোনা শনাক্ত হয়। তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ওইদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে মারা যান তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূরবী গোলদার বলেন, ‘ওই ব্যক্তি কীভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার কোনো উৎস আপাতত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি কৃষি কাজ করতেন এবং বাড়িতেই থাকতেন।’

আজ সকাল ১১টার দিকে ওই ব্যক্তির বাড়ি সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন ইউএনও পূরবী গোলদার।

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

10h ago