অভাব রুখতে পারেনি আসমানীকে

গৃহশিক্ষক তো দূরের কথা অভাবের সংসারে ঠিকমত খাবারই জোটেনি আসমানীর। জোটেনি ভালো পোশাকও। সহপাঠীরা সবাই ইঞ্জিনচালিত গাড়িতে স্কুলে যাওয়া-আসা করলেও দিনমজুর বাবার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই সারাবছর বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে স্কুলে ক্লাস করতে হয়েছে তাকে। সব বাধা মাড়িয়ে সে এ বছর এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে।
বাবা মায়ের সঙ্গে আসমানী খাতুন। ছবি: স্টার

গৃহশিক্ষক তো দূরের কথা অভাবের সংসারে ঠিকমত খাবারই জোটেনি আসমানীর। জোটেনি ভালো পোশাকও। সহপাঠীরা সবাই ইঞ্জিনচালিত গাড়িতে স্কুলে যাওয়া-আসা করলেও দিনমজুর বাবার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই সারাবছর বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে স্কুলে ক্লাস করতে হয়েছে তাকে। সব বাধা মাড়িয়ে সে এ বছর এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে।

আসমানী খাতুন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ডাউটি গ্রামের ওলিয়ার মোল্যার মেয়ে ও কোলাবাজার ইউনাইটেড হাইস্কুলের ছাত্রী। মেয়ের ভালো ফলাফলে হতদরিদ্র বাবা মা খুশি হলেও কীভাবে তাকে কলেজে পড়ানোর খরচ যোগাবেন তা নিয়ে পড়েছেন মহাচিন্তায়।

রোববার ফল প্রকাশের পর আসমানীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটুখানি জমির ওপর ভাঙা মাটির দেয়াল ও বেড়ার একটি ঘর। এর পাশেই রয়েছে ছনের ছাউনি ও পাটকাঠি দিয়ে ঘেরা আরেকটি ঝুপড়ি ঘর। সেখানে আসমানীর বাস।

আসমানী জানায়, আমার বাবা-মা প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নেই। তারপরও তারা আমার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে যে কষ্ট করেছেন তা দেখে আমার নিজেরই খারাপ লাগে। এ কারণে আমার নিজের ভেতর সব সময় ভালো ফলাফলের জন্য সংকল্প কাজ করত। তাই বেশি পড়াশুনা করতাম। এখন কলেজে ভর্তি হয়ে কীভাবে লেখাপড়া চলবে সে চিন্তায় পড়েছি।

আসমানীর বাবা ওলিয়ার রহমান মোল্যা বলেন, জিপিএ-৫ কী আমি বুঝি না। মানুষে বলছে আমার মেয়ে ভালো ফলাফল করেছে।

তিনি আরও বলেন, বসতবাড়ির ৫ শতক ভিটে ছাড়া চাষযোগ্য জমি নেই। সারা বছর পরের খেতে কাজ করে সংসার চালাতে হয়। তারপরও সব সময় কাজ থাকে না। অভাবের সংসারে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ঠিকমত যোগাতে পারিনি। টাকার অভাবে তার ভালো পোশাক ও স্কুলে যাওয়া আসার খরচ দিতে পারেনি। এখন শুনছি মেয়ে পরীক্ষায় ভালো করেছে। কীভাবে কলেজের খরচ আসবে এখন বসে বসে সে চিন্তাই করছি।

কোলাবাজার ইউনাইটেড হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব জোয়ার্দার জানান, হতদরিদ্র বাবার মেয়ে আসমানী অত্যন্ত বিনয়ী স্বভাবের। ক্লাসে সব সময় মনোযোগী ছিল। তার ফলাফলে সব শিক্ষক কর্মচারী ভীষণ খুশি।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago