মেস ভাড়া নিয়ে বচসায় তালাবদ্ধ ৬ ছাত্রীকে উদ্ধার করল পুলিশ
বকেয়া মেস ভাড়ার জন্য আটকে রাখার অভিযোগ পেয়ে কুমিল্লায় ভিক্টোরিয়া কলেজের ছয় ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ডিগ্রি শাখা সংলগ্ন ধর্মপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ধর্মপুরের জাহানারা মঞ্জিল নামের একটি বাড়িতে ওই শিক্ষার্থীরা ভাড়া থাকতেন।
চার ঘণ্টা ধরে আটকে থাকা ছাত্রীরা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করেন। মেস মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তারা জানান, সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর তারা বাড়িতে ছিলেন। আজ মেসে এসেছিলেন জরুরি কিছু মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ভাড়া বকেয়া থাকায় চার ঘণ্টা তাদের তালাবদ্ধ করে রাখে মেস মালিক।
ছাত্রীরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মেসে ঢোকার পর মূল গেটে বাড়ির মালিক তালা লাগিয়ে দেন। আমরা বলেছি, যেহেতু মেসে ছিলাম না, টিউশনও নেই। অর্ধেক ভাড়া দেব। কিন্তু বাড়ির মালিক পুরো ভাড়ার জন্য গেটে তালা লাগিয়ে আমাদের আটকে রাখেন। আমরা বাধ্য হয়ে সাহায্যের জন্য ৯৯৯ নম্বরে কল করি। পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
ওই মেসের মালিক জানাহারা বেগমের অভিযোগ করে বলেন, ‘তাদের কাছে আমি তিন-চার মাসের ভাড়া পাই। ছাত্রী প্রতি ভাড়া ১০২০ টাকা। তারা অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে আমি বলেছি তোমরা দুইশ টাকা করে কম দাও। কিন্তু তারা বাসা ছেড়ে দিতে চাইলে আমি বলেছি পুরো ভাড়া পরিশোধ না করলে মালামাল নেওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে বহু ভাড়াটিয়া টাকা না দিয়ে চলে গেছে। আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের বলেছি, ভাড়া না দিলে তালা খুলব না। মেয়েরা আমার বাড়িতে পুলিশ কল দিয়ে এনেছে। ভাড়ার টাকায় গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খরচ চলে আমার।’
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানা সাব-ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন জানান, কল পেয়ে টিমসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বাসার প্রধান ফটকে তালা দেওয়া। মালিককে ডেকে তালা খোলা হয়। এ বিষয়ে বাসার মালিক ও ভাড়াটিয়া ছাত্রী দুই পক্ষের সঙ্গে কথা হয়। মালিক পক্ষ চায় শতভাগ ভাড়া, আর ছাত্রীরা মহামারির সময়ে অর্ধেক ছাড় চায়। প্রাথমিকভাবে বিষয়টির সমাধান করে, তাদের বাসা থেকে বের করে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। যেকোনো সমস্যায় উভয় পক্ষকে থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মেস ভাড়া মওকুফের আবেদন পাওয়ার পর আমরা জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছি। মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বাড়ির মালিক ও স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতার হাত বাড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
Comments