৩৪৪ নাগরিকের বিবৃতি

‘সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মহাবিপদের দিকে ঠেলে দেবে’

দেশে যখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বিপদজনকভাবে বাড়ছে তখন সরকারের সাধারণ ছুটি তুলে নিয়ে ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে’ অফিস, গণপরিবহনসহ সবকিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৩৪৪ নাগরিক।
স্টার ফাইল ফটো

দেশে যখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বিপদজনকভাবে বাড়ছে তখন সরকারের সাধারণ ছুটি তুলে নিয়ে ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে’ অফিস, গণপরিবহনসহ সবকিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৩৪৪ নাগরিক।

বিবৃতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগপর্যন্ত সারাদেশে কার্যকর লকডাউন নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে।

ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘সর্বজন কথা’ থেকে পাঠানো এ বিবৃতিতে দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, স্কুল শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ মতামত দিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়,  ‘কোভিড ১৯ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগী গত ৮ মার্চ চিহ্নিত হওয়ার পর সংক্রমণ রোধে যথাযথ লক-ডাউনের পরিবর্তে এখন পর্যন্ত ছয় দফায় রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করা হয়েছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পোশাক কারখানা খুলে দিলে রোগীর সংখ্যা দ্রুতই বাড়তে থাকে। একমাসের মধ্যে রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঈদ উপলক্ষে দোকান-পাট, কারখানা খোলা এবং অন্যান্য ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেও রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এরকম পরিস্থিতিতে মহামারি মোকাবেলায় গঠিত ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শ ছিল আরো বেশি কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার। তাদের পরামর্শকে বিবেচনা না করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সচল করার সিদ্ধান্ত খুবই আত্মঘাতী হবে বলে আমরা মনে করছি।’

তারা বলেন, ‘বিরাজমান করোনা পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার কোনোরকম সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা কৌশল ছাড়া সাধারণ ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত করোনা সংক্রমনের ঝুঁকিসহ দীর্ঘমেয়াদে শুধু দরিদ্র আর সাধারণ নাগরিকরাই পড়বেন না বরং সার্বিকভাবে সবাইকে মহাবিপদের দিকে ঠেলে দেবে। এতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ শুরু হয়ে গেলেও অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবেও আমরা বিচ্ছিন্ন থাকবো। এতে করোনা পরবর্তী অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তিও হারাবে।‘

এ অবস্থায়, খাদ্য ও ওষুধসহ জরুরি পণ্য পরিবহণ বাদে সারাদেশে কার্যকর লকডাউন, লকডাউনে কর্মহীন মানুষের ঘরে খাবার ও নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়া, দেশের সব পর্যায়ে টেস্টের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানো, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহজলভ্য কিটের ট্রায়ালের ফল জনসম্মুখে প্রকাশ করা এবং ট্রায়াল সফল হলে এই কিটের দেশব্যাপী ব্যাপক ব্যবহারের দ্রুত অনুমোদন দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ শয্যা করোনা চিকিৎসায় ব্যবহারের যথাযথ উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. তানজীম উদ্দিন খান, গীতি আরা নাসরীন, আরশাদ মোমেন,  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, মীর্জা তাসলিমা সুলতানা, যুক্তরাষ্ট্রের আমহার্স্ট কলেজের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুসরাত এস চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।

 

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka Metro rail transported 3.35 lakh commuters since opening

Metro rail: Dhaka University and Bijoy Sarani stations to open Dec 13

The Dhaka University and Bijoy Sarani stations of the metro rail service will open for public on December 13

31m ago