চৌগাছায় সাবেক ইউপি সদস্যের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার

যশোরের চৌগাছায় বাড়ি থেকে অপহৃত সাবেক ইউপি সদস্য বিপুল হোসেনের (৩৮) বস্তাবন্দী  উদ্ধার মরদেহ করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে চৌগাছা থানার পুলিশ বেড়গোবিন্দপুর বাওড় অফিস সড়ক থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, পরকীয়া প্রেমের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। একই গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে তারা প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই নারীর ছেলে ও মেয়ের জামাই বিপুল হোসেনকে উঠিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে।

নিহত বিপুল হোসেন উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের কাকুড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত শামসুল হোসেনের ছেলে।

গতকাল সকাল ১০ টার দিকে বিপুল হোসেনকে বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায় ওই নারীর মেয়ের জামাই। এরপর আজ শুক্রবার তার মরদেহ উদ্ধার করা হলো।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার শিমুল হোসেন ও নিহতের ভাই লিটন হোসেন বলেন, ‘গতকাল সকাল ১০ টার দিকে গরু কেনার নাম করে বিপুল হোসেনকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভোররাত তিনটা পর্যন্ত বিপুলের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে রিং বাজলেও কেউ ফোন ধরেনি। এসময়ে বিপুলের খোঁজ করা হলে অপহরণকারীরা জানায় বিপুল গরু কিনতে পুড়াপাড়া বাজারে গেছে। রাতেও বাড়িতে না ফিরলে আবারও তারা তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় চৌগাছায় আছে।’

এরপর ইউপি সদস্য শিমুল হোসেনসহ পরিবার চৌগাছা থানায় গিয়ে নিহতের ভাই লিটন হোসেন বাদী হয়ে পরকীয়ার বিষয়টি উল্লেখ অপহরণের অভিযোগে ডায়েরি করার জন্য লিখিত অভিযোগ দেন। সে সময়ে অফিসিয়াল কাজে থানার ওসি রিফাত খান রাজীব চুয়াডাঙ্গায় জেলায় ছিলেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক তখনই কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না দিয়ে আরও খোঁজার পরামর্শ দেন। পরে ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক ওই গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে আসেন। তবে তদন্ত করে আসলেও থানায় জিডি এন্ট্রি করা হয়নি।

পরে শুক্রবার ভোররাতে একটি অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে নিহতের শ্বশুর আমজাদ হোসেনের মোবাইলে কল দিয়ে বলা হয়, ‘তোমার জামাইয়ের মরদেহ বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের পাশে রাস্তায় বস্তাবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে।’

শুক্রবার সকালেই পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পেয়ে চৌগাছা থানা পুলিশকে জানায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে দুর্গন্ধযুক্ত লাশ বস্তাবন্দী জড়সড় হয়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে।

চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক মোবাইল ফোনে মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমি নিজেই তাৎক্ষণিকভাবে গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে আসি।’

নিহতের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না না তারা কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করতে এসেছিল। আমি তাৎক্ষণিকভাবে গিয়ে তদন্ত করে আসছি।’

তবে ইউপি সদস্য শিমুল হোসেন বলেন, ‘পরকীয়ার ঘটনা বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে অপহরণকারীর নাম উল্লেখ করে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। সে সময় আমরা ৪-৫ জন থানায় উপস্থিত ছিলাম।’

ওসি (তদন্ত) বলছেন আপনারা লিখিত অভিযোগ দেননি জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেন, ‘উনারা তাহলে আমাদের অভিযোগ এন্ট্রি করেননি। আমরা অবশ্যই লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েই লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।’

চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, ‘কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

14h ago