চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ১০০ বেডের করোনা ইউনিট চালু আগামীকাল

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে করোনা চিকিৎসা। হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনে ১০টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ ১০০ বেড নিয়ে এই চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
CTG Hospital.jpg
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে করোনা চিকিৎসা। হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনে ১০টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ ১০০ বেড নিয়ে এই চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সরকারের সহযোগিতা পেলে নবনির্মিত ১৪ তলা ভবনটির পুরোটাই করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে ২০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডসহ প্রায় ৪০০ রোগীর সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরই সবচেয়ে বেশী সংখ্যক রোগীকে সেবা দেয় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত এ হাসপাতালটি স্থানান্তরের জন্য আলাদা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা স্থানান্তর প্রক্রিয়া স্থগিত রেখে করোনা চিকিৎসার জন্য দেড় মাস ধরে হাসপাতালটিকে প্রস্তুত করেছি।’

তিনি বলেন, ‘অলাভজনক এ হাসপাতালটি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অনুদানে পরিচালিত হয়ে আসছে। আমরা মনে করছি- এ সময়ে আমাদের যে সক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারব। পুরাতন হাসপাতাল থেকে আলাদা ভবন ও গেট ব্যবহার করা হবে বিধায় সংক্রমণ সাধারণ রোগীর মাঝে ছড়ানোর সুযোগ নেই।’

‘প্রয়োজন হলে ২০টি ভেন্টিলেটরের পাশাপাশি পুরো আইসিইউ ইউনিট আমরা করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহার করতে পারব। যাতে এককভাবে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগীর সেবা দেওয়া সম্ভব’, বলেন তিনি।

রেজাউল করিম আজাদ আরও বলেন, ‘গত এপ্রিলের মাঝামাঝিতে প্রাথমিকভাবে প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদন হয়েছে। ইতোমধ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্রস্তুত ও ভেন্টিলেটর স্থানান্তরসহ ১০০ বেড প্রস্তুত করা হয়েছে।’

করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় দায়িত্বরত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থকর্মীদের কোয়ারেন্টিন সুবিধার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ডাক্তার ও নার্সদের সাত দিন পর পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন প্রয়োজন হওয়ায় সাধারণ রোগীর সেবার চেয়ে করোনা রোগীর জন্য প্রায় তিনগুণ জনবল প্রয়োজন। আর্থিক ও জনবল বিবেচনায় আমরা এখন ১০০ বেডের বেশী রোগীকে সেবা দিতে পারব না। তাই আমরা সাড়ে ছয় লাখ বর্গফুটের ১৪ তলা ভবনের মাত্র এক তৃতীয়াংশ ব্যবহার করেছি। সরকার যদি এ বিষয়ে সহায়তা করে তাহলে আমরা পুরো ভবনটিই করোনা রোগীর সেবায় কাজে লাগাতে পারব।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫০ শয্যার ১৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের কাজ সম্প্রতি শেষ করেছে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুরাতন ভবন থেকে সম্প্রতি নতুন এ ভবনে হাসপাতাল স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রকোপের এ সময়ে হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটি এখানে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়।

কর্তৃপক্ষ জানায়, এ হাসপাতাল থেকেই করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত হাসপাতালে পাঠানো হবে। কেউ আক্রান্ত হলে সরকার নির্ধারিত হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি অন্য হাসপাতাল থেকেও এ হাসপাতালে স্থানান্তর করা যাবে। এ ছাড়াও, সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ওয়ার্ডটি বর্তমান হাসপাতাল ভবন থেকে সম্পূর্ণ পৃথক রাখা হয়েছে বিধায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।

Comments

The Daily Star  | English
quota reform movement,

Govt publishes preliminary list of those killed in July-August protests

The interim government today published a preliminary list of 726 people who died during the student-led mass protests in July and August.

48m ago