করোনা আপডেট: মানিকগঞ্জ, কক্সবাজার, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, পটুয়াখালী
মানিকগঞ্জে নতুন করে ১২ জন ও কক্সবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চাঁদপুরে করোনা আক্রান্ত এক জন ও করোনার উপসর্গ নিয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও, করোনার উপসর্গ নিয়ে ময়মনসিংহে দুজন এবং পটুয়াখালীতে দুজন মারা গেছেন।
মানিকগঞ্জে আরও ১২ জনের করোনা শনাক্ত
মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, জেলায় নতুন করে আরও ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৩১৭ জন। নতুন শনাক্তদের মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় নয় জন, সাটুরিয়া উপজেলায় দুই জন ও ঘিওর উপজেলার এক জন আছেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত মোট তিন হাজার ২৯১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে দুই হাজার ৯৫৬টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। যাতে পজিটিভ পাওয়া গেছে ৩১৭ জনের। এরমধ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ৯৩ জন, সিংগাইর উপজেলায় ৬০ জন, সাটুরিয়া উপজেলায় ৫৯জন, ঘিওর উপজেলায় রয়েছেন ৪৬ জন, হরিরামপুর উপজেলায় ২৮, শিবালয় উপজেলায় ২২ জন ও দৌলতপুর উপজেলায় রয়েছেন ৯জন।’
আক্রান্তদের মধ্যে ২২ জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ২২৭ জন নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। সুস্থ হয়েছেন ৮৭ জন এবং মারা গেছেন তিন জন।
উল্লেখ্য, জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৫জন। এদের মধ্যে ১০জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ১জন কিশোর। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৩জন। এদের মধ্যে দুই জন সিংগাইর উপজেলায় এবং অন্যজন হরিরামপুর উপজেলায়।
কক্সবাজারে নতুন ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত
কক্সবাজার সংবাদদাতা জানান, জেলায় আরও ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আজ সরকারি মেডিকেল কলেজে স্থাপিত আইইডিসিআরের ফিল্ড ল্যাবে মোট ২৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
নতুন শনাক্ত হওয়া ৩৭ জনের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ১৪ জন, চকরিয়া উপজেলায় আট জন, উখিয়া উপজেলায় সাত জন, রামু উপজেলায় এক জন, পেকুয়া উপজেলায় এক জন, পার্বত্য বান্দরবান জেলার সদর উপজেলায় এক জন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় এক জন, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় তিন জন ও মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিক এক জন।
কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অনুপম বড়ুয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ২ এপ্রিল থেকে কক্সবাজার জেলা মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। এ পর্যন্ত এখানে মোট ৭ হাজার ৯৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১২৬ জনের। ওই ১ হাজার ১২৬ জনের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার জেলার ১ হাজার ১ জন, বান্দরবান জেলার ৪৪ জন, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া দুই উপজেলায় ৫০ জন, বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক ৩০ জন।
চাঁদপুরে করোনায় ১ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১ জনের মৃত্যু
চাঁদপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে গতকাল রাত ১১ টার দিকে হাজীগঞ্জ উপজলার বলাখালের এক ব্যক্তি করোনার উপসর্গে মারা যান। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে চাঁদপুর শহরের দক্ষিণ গুনরাজদীতে অন্যজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আবদুর রশিদ জানান, বলাখালে মৃত ব্যক্তির আজ সকাল ১১টায় নিজ এলাকায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে তার দাহ সম্পন্ন করা হয়েছে।
অপরদিকে, চাঁদপুর শহরে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির আগেই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গত ৪ জুন সকালে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
তার ছেলে বলেন, ‘আমার বাবা নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.সাজেদা বেগম জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ময়মনসিংহে করোনার উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু
ময়মনসিংহ সংবাদদাতা জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে আজ সকালে ময়মনসিংহ নগরীর এসকে হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় এক গার্মেন্টস কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। তার বাড়ি সাভারের শিমুলিয়ায়।
ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. এবিএম মশিউল আলম বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট ও হালকা জ্বর নিয়ে শনিবার সকাল ৭টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে শনিবার বিকালে শ্বাসকষ্ট বেশি হলে তাকে এসকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। আজ সকাল সাতটার দিকে মারা যান তিনি। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং রিপোর্ট পেলে জানা যাবে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না।’
অপরদিকে, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে শনিবার রাতে এক কাঠমিস্ত্রী মারা গেছেন।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুহেলি শারমিন বলেন, ‘আজ সকালে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না।’
পটুয়াখালীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু
পটুয়াখালী সংবাদদাতা জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে পটুয়াখালীতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে এক জন পটুয়াখালী নদর উপজেলার এবং অপর জন বাউফলের।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘উপজেলার ইন্দ্রকুল গ্রামের মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স ৬৫ বছর। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন। ওই ব্যক্তি জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে শনিবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তিনি বরিশাল না গিয়ে নিজ বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নেন। এতে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। আজ রোববার সকাল সাতটার দিকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে সাতটার দিকে তার মৃত্যু হয়। মৃত ব্যাক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।’
অপরদিকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স ৪৮ বছর। তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং তার বাড়ি শহরের টাউন কালিকাপুর এলাকায়।
মারা যাওয়া ব্যাক্তি বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর-হাঁচি-কাশিতে ভুগছিলেন। শনিবার রাত নয় টার পর জ্বর- শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই ব্যক্তিকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১১ টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মারা যাওয়া ব্যক্তির বাড়িসহ ও আশপাশের এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। কোভিড-১৯ প্রটোকল অনুয়াযী মৃত ব্যক্তিদের দাফন করা হয়েছে।
Comments