ফরিদপুর শহর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার ভাইসহ অন্তত ৭ জন গ্রেপ্তার
ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার ভাইসহ অন্তত সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টা থেকে আজ ভোররাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন— ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরকত ইবনে সালাম ও তার সহোদর ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল।
এছাড়াও, ফরিদপুর পৌরসভার এক কাউন্সিলর ও এক নারী নেত্রীসহ আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শহরের সড়কগুলোতে গাড়িসহ অনেক পুলিশ সদস্যকে দেখে শহরবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম হয়। কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে এমনটি আঁচ করতে পেরে অনেকেই দ্রুত বাড়ি ফিরে যান।
শহরের বদরপুর এলাকায় ওই দুই ভাইয়ের বাড়ি ও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুলিশ ঘিরে ফেলে। তবে তাদেরকে কোন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।
বরকত ইবনে সালাম ও রুবেলের গ্রেপ্তারের সংবাদ নিশ্চিত করে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা অভিযান শুরু করেছি আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
প্রসঙ্গত গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লাবাড়ি সড়কে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান দিয়ে ওই বাড়িতে হামলা চালায় এবং ঢিল ছুঁড়ে বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে ও কলাপসিবল গেট ভাঙার চেষ্টা করে।
প্রথম দফা হামলার সময় সুবল সাহা বাড়িতে থাকলেও দ্বিতীয় দফা হামলার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ব্যাপারে গত ১৮ মে সুবল সাহা বাদি হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় তার বাড়িতে হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলায় তিনি সব আসামিকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করেন।
পুলিশ ওই হামলার ঘটনায় সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে। এবং এই ঘটনার সাথে জড়িতদের তালিকা প্রস্তুত করে।
গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই ওই হামলার ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোরশেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতির বাড়িতে হামলার ঘটনা ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আরও নানা রকম অভিযোগ রয়েছে।’
প্রসঙ্গত বরকত ও রুবেল ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অত্যন্ত নিকটজন ছিলেন। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্তমানে ফরিদপুর শহরতলীর বদরপুরে অবস্থিত তার নিজ বাড়ি আফসানা মঞ্জিল এ অবস্থান করছেন।
ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরকত ইবনে সালাম ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলসহ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’
‘তবে কী কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই,’ যোগ করেন তিনি।
Comments