মে মাসে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে ৩১ শতাংশ: মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
সাধারণ ছুটি চলাকালে গত মে মাসে ১৩ হাজার ৪৯৪ নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এসময়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের হার বেড়েছে ৩১ শতাংশ।
আজ বুধবার মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) এক টেলি-সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে 'নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা: কোভিড-১৯' শীর্ষক প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে দেশের ৫৩টি জেলায় ১৩ হাজার ৪৯৪ জন নারী ও শিশু সহিংস ঘটনার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ১৬০ জন জানিয়েছেন, মে মাসে তারা জীবনে প্রথমবারের মতো সহিংস ঘটনার শিকার হলেন। এর মধ্যে ২,৪৮১ জন নারী ও ১,৩৯৯ জন শিশু।
এমজেএফ-এর সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৯৭.৪ শতাংশ নারী পরিবারে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা তাদের স্বামীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪,৯৪৭ জন নারী মানসিক নির্যাতনের শিকার এবং ২,০৮৫ জন নারী তাদের স্বামী বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৪০৪ জন বাড়িতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ছাড়াও, ১৭৯ জন যৌন হয়রানির শিকার, ৪৮ জনকে ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়, ১৭ জন খুন হয়েছেন এবং ৫৪ জন ত্রাণ সামগ্রী পাওয়ার সময় যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
এ সময়, ১৭০টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটে এবং এমজেএফ-এর সহযোগী সংগঠনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে ২৩৩টি বাল্যবিয়ে ঠেকানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে শতকরা ৯২ জন তাদের বাবা-মা ও আত্মীয়দের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, মে মাসে শিশু ধর্ষণ, যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য ঘটনার সংখ্যা ছিল ৮০টি।
দেশের ৫৩টি জেলায় এমজেএফ-এর ১১৩টি সহযোগী সংগঠন জরিপের জন্য মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করে।
এমজেএফ জানায়, ফোনে প্রায় ৫৩,৩৪০ জন নারী ও শিশুর সাক্ষাতকার নেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, 'লকডাউন' পরিস্থিতিতে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে। এপ্রিলে ৪,২৪৯ জন নারী ও ৪৫৬ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়।
তিনি বলেন, এ সময় অনেকেই চাকরি ও জীবিকা হারিয়েছেন। ফলে, নারীরা তাদের বাড়িতে অর্থনৈতিক দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন।
Comments