আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয়ের বিনিয়োগ চায় রিহ্যাব
আসন্ন বাজেটে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো সরকারের কাছে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয়ের বিনিয়োগের অনুমতির আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি, অপ্রদর্শিত আয়ের উৎস বিবেচনা না করে আবাসন খাতে এই অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া। যা করোনা মহামারিতে ঝুঁকিতে থাকা আবাসন শিল্পকে টিকে থাকতে সহায়তা করবে।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘অর্থ কোন উৎস থেকে এসেছে তা নিয়ে প্রশ্ন না তুলে সরকারের উচিত আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয় বা কালো টাকা ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।’
‘তাহলে পরবর্তীতে মূল্য সংযোজন কর ও নিবন্ধন ফির মাধ্যমে শিল্প ও অর্থনীতি উভয়ই যথেষ্ট উপকৃত হবে’, বলেন তিনি।
গত মাসের শেষের দিকে সরকারকে এ বিষয়ে একটি বাজেট প্রস্তাবও দিয়েছে রিহ্যাব।
রিহ্যাব জানিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে সরকারের উচিত টাকা সাদা করার প্রকল্পটি আরও প্রলুব্ধ করা। তাহলে, এই অর্থ দেশের রিয়েল এস্টেট শিল্প এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও ব্যবহার করা যাবে।
রিহ্যাবের প্রথম সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘বিদেশে বৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে অনেকেই তা অবৈধ উপায়ে দেশে পাঠায়। সরকারের উচ্চ কর এড়াতে তারা এগুলো করে থাকে।’
‘সরকার যদি আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ না দেয় এবং এই উৎসের অর্থ ব্যয় করা থেকে বিরত থাকে, তাহলে মানুষ তা বিদেশেই ব্যয় করবে,’ বলেন তিনি।
সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ফ্ল্যাট ও জমির রেজিস্ট্রেশন ফি ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে রিহ্যাব। এ ছাড়াও, সম্পত্তি ক্রয়ে উৎসাহ দিতে দীর্ঘমেয়াদী গৃহঋণের জন্য একটি বিশেষ তহবিল বরাদ্দের দাবিও জানিয়েছে সংস্থাটি।
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের পাঁচ শতাংশ সুদে গৃহঋণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সকলের আবাসন নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষকেও একই সুবিধা দেওয়া উচিত। যা সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি অংশ।’
‘সরকার যদি আমাদের দাবি পূরণ করে, তাহলে অ্যাপার্টমেন্টের দামও কমে যাব,’ যোগ করেন তিনি।
রিহ্যাব সভাপতির মতে, অনেক কারণেই গত কয়েক বছরে আবাসন শিল্পের বিক্রি কমে গেছে। কিন্তু, করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে গৃহনির্মাণের চাহিদা আরও মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে।
গত বছর পরিস্থিতির একটু উন্নতি হলেও চলতি বছরে এসে আবারও অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা কমেছে।
আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘গ্রাহকের মানসিকতার কারণেই এমন হচ্ছে। কারণ এই কঠিন সময়ে কেউ সম্পদের পেছনে অর্থ ব্যয় করতে চাইবে না।’
গত ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির আগে রিহ্যাব সদস্যদের ছয় হাজার প্রকল্প চলমান ছিল। কিন্তু, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মানতে গিয়ে তারা কেউ কাজে ফিরতে পারছে না।
Comments