মাতৃত্বকালীন ছুটি বাতিল করে করোনা রোগীর সেবা করতে চান ডা. আফরোজা

করোনা মহামারি মধ্যেও চার মাস বয়সী পুত্র সন্তানকে রেখে হাসপাতালে ফিরতে চান চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহমুদ সুলতানা আফরোজা। ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হওয়ার দেড় মাস আগেই কর্মস্থলে ফিরতে ইতোমধ্যে ছুটি বাতিলের আবেদন করেছেন তিনি।
স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে ডা. মাহমুদ সুলতানা আফরোজা। ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারি মধ্যেও চার মাস বয়সী পুত্র সন্তানকে রেখে হাসপাতালে ফিরতে চান চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহমুদ সুলতানা আফরোজা। ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হওয়ার দেড় মাস আগেই কর্মস্থলে ফিরতে ইতোমধ্যে ছুটি বাতিলের আবেদন করেছেন তিনি।

ডা. মাহমুদ সুলতানা আফরোজা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রতিদিনই দেখছি চিকিৎসা না পেয়ে অনেক অসহায় মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। আমি বেশ কয়েকদিন ধরেই ভাবছি ছুটি বাতিল করে করোনা রোগীদের সেবা করবো।’

‘কিন্তু আমার পুত্র জেইন নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়ায় এবং ওজন কম হওয়ায় তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই, বাধ্য হয়েই বাসায় থাকতে হয়েছে’, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা মহামারি বাড়তে থাকায় এবং সেবা প্রার্থীদের অসহায়ত্ব দেখে, নিজেকে আর ঘরবন্দি করে রাখতে পারিনি।’

ডা. আফরোজা বলেন, ‘গত ৬ জুন থেকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ১০০ বেডের একটি করোনা ইউনিট চালু করেছে। এরপরই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে আমার স্বামী ও পরিবারের অন্য সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’

‘লো বার্থ ওয়েট বেবি হওয়ায়, এ সময়ে তাকে ফেলে যাওয়া একটু ঝুঁকি। তা জেনেও একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি মহান দায়িত্ব ও পেশাগত শপথের কথা ভুলতে পারি না। তাই আল্লাহর উপর ভরসা রেখেই আমি কর্মস্থলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, বলেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডা. রেজাউল করিম আজাদ বলেন, ‘করোনা রোগীর সেবা দেওয়া অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও ডা. আফরোজা রোগীদের সেবা করতে ছুটি বাতিলের আবেদন করেছেন। তিনি করোনা ইউনিটে সেবা করতে আগ্রহী। আবেদনে তিনি সে বিষয়েও উল্লেখ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘করোনার রোগীর সেবায় সাধারণ রোগীর চেয়ে কয়েকগুণ বেশী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী প্রয়োজন হয়। ছুটি শেষ হওয়ার আগে ডা. আফরোজার কাজে যোগদানের বিষয়টি ইতিবাচক। এতে অন্যান্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে কর্ম স্পৃহা বাড়বে।’

‘তবে, তার পুত্র সন্তানের বর্তমান যে অবস্থা, সে পরিস্থিতিতে কাজে যোগ দেওয়া উচিত হবে কিনা বিবেচনা করা হচ্ছে’, যোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরই, সবচেয়ে বেশী সংখ্যক রোগীকে সেবা দেয় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। গত ৬ জুন থেকে ১০টি ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ ১০০ বেড নিয়ে এই চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে হাসপাতালটি। পর্যায়ক্রমে ২০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডসহ প্রায় ৪০০ বেডে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago