করোনা আপডেট: জামালপুর, চাঁদপুর, পিরোজপুর, বরিশাল, পঞ্চগড়
জামালপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় এক নারী মেডিকেল অফিসার, দুই স্বাস্থ্য কর্মীসহ নতুন করে ১৯ জন এবং চাঁদপুর জেলায় নতুন করে আরও ৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পিরোজপুরে এ পর্যন্ত ১০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এ জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬৬ জন। এ দিকে, বরিশাল মেডিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ বৃদ্ধ ও পঞ্চগড়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে আজ সকালে এক তরুণ মারা গেছেন। দ্য ডেইলি স্টার স্থানীয় সংবাদদাতারা এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
জামালপুরে চিকিৎসকসহ আরও ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
জামালপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় এক নারী মেডিকেল অফিসার, দুই স্বাস্থ্য কর্মী ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাসহ নতুন করে ১৯ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তই দাস আজ শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নতুন শনাক্তদের মধ্যে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নারী মেডিকেল অফিসার ও মাদারগঞ্জের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ১৫ জনকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আর বাকি চার জনকে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে স্থাপিত আইসোলেশন সেন্টারে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ৪০৪ জনের করোনা শনাক্ত হলো। তাদের মধ্যে ২৭ চিকিৎসক, ১৬ নার্স ও ৫২ জন স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন বলেও তিনি জানান।
সিভিল সার্জন জানান, সুস্থ হওয়ায় আজ শনিবার দুপুরে এক চিকিৎসকসহ ২১ জনকে আইসোলেশন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জেলায় এ পর্যন্ত ১৭৮ করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন এবং পাঁচ জন মারা গেছেন বলে জানান তিনি।
চাঁদপুরে নতুন করে আরও ৪৯ জনের করোনা শনাক্ত
চাঁদপুর জেলায় নতুন করে আরও ৪৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ৪১৩ জনের করোনা শনাক্ত হলো। চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ আজ বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আজ জেলার ৯৪টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে ৪৯টি করোনা পজিটিভ। বাকিগুলো নেগেটিভ।
এ দিকে, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে চাঁদপুর সদর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন একজনসহ জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে আজ পাঁচ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে, আজ শনিবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের ৬৫ বছরের এক জন মারা গেছেন। বাকিরা মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও হাইমচর উপজেলার বাসিন্দা।
পিরোজপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে, সুস্থ ৬৬ জন
পিরোজপুরে এ পর্যন্ত ১০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬৬ জন। আজ বিকেলে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে ৩১ জন, ভান্ডারিয়ায় ২০ জন, মঠবাড়িয়ায় ২২ জন, ইন্দুরকানিতে ১১ জন, নাজিরপুরে আট জন, নেছারাবাদে আট জন ও কাউখালী উপজেলায় দুই জন। তাদের সবাই বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সুস্থ আছেন।
তিনি আরও জানান, আক্রান্তদের মধ্যে চার ব্যাংক কর্মকর্তা, এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক পুলিশ সদস্য রয়েছে।
এ ছাড়া, সদর উপজেলায় ২০ জন, ভান্ডারিয়ায় ১২ জন, মঠবাড়িয়ায় ১৬ জন, ইন্দুরকানিতে ১১ জন, নাজিরপুরে চার জন, নেছারাবাদে দুই জন এবং কাউখালী উপজেলায় একজন সুস্থ হয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায় এক নারীসহ তিন জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল প্রথম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এক যুবকের করোনা শনাক্ত হয়।
বরিশাল মেডিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ বৃদ্ধের মৃত্যু
বরিশালে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে আজ করোনার উপসর্গ জ্বর, কাশি নিয়ে দুই বৃদ্ধ মারা গেছেন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন আজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে আজ দুপুর পৌনে দুইটায় বরিশাল সদর উপজেলার ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হন। বিকেল সাড়ে ৪টায় করোনা ইউনিটে তিনি মারা যান।
অন্যদিকে, নগরীর এয়ারপোর্ট থানার মুশুরিয়া এলাকার ৭৫ বছর বয়সী আরেক বৃদ্ধ করোনা উপসর্গ নিয়ে বিকেল সোয়া ৫টায় হাসপাতালে ভর্তি হন। তার ১৫ মিনিট পর, সাড়ে ৫টায় তিনি মারা যান বলে জানান ডা. বাকির হোসেন।
এ দিকে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় এ পর্যন্ত মোট এক হাজার ৩৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৩৬৯ জন ও মারা গেছেন ৩১ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায়
৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের পটুয়াখালী ও ঝালকাঠি ছাড়া বাকি চার জেলায় ১৩ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।
পঞ্চগড়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে তরুণের মৃত্যু
পঞ্চগড়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে ২২ বছর বয়সী এক তরুণ মারা গেছেন। পঞ্চগড় পৌরসভার রাজনগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। আজ সকালে নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।
মৃতের পরিবার ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ আগে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই তরুণ স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন। সে সময় এক্স-রেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে সে সব পরীক্ষার প্রতিবেদনসহ তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন।
সেখানে চিকিৎসকরা তার এক্স-রে প্রতিবেদন ও শারীরিক অবস্থা দেখে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু, পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। আজ শনিবার সকালে তার শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে গেলে বাড়িতেই তিনি মারা যান।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ওই তরুণের এক্স-রে প্রতিবেদন ও শারীরিক অবস্থা দেখে তিনি নিউমোনিয়াসহ সর্দি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলে মনে হয়েছে।’
এ ঘটনায় করোনা পরীক্ষার জন্য মৃত তরুণ ও তার বাবা-মা ও ভাইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ দিকে, আজ দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ওই তরুণের মরদেহ পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
Comments